আকাশ জুড়ে শুধু কালো ধোঁয়া। হোটেলের ন’তলার ঘর থেকে যত দূর চোখ যাচ্ছে, শুধু ধোঁয়া ছাড়া কিছুই নজরে আসছে না। আর জানলা খুললেই শুনছি প্রবল চিৎকার। এদিক ওদিক বাড়ি, অফিস জ্বলছে। আর আমরা প্রাণভয়ে হোটেলে বন্দি। কিন্তু এর পর আমাদের হোটেলেও আন্দোলনকারীরা আক্রমণ করবেনা তো?
মঙ্গলবার সকাল থেকে শুধু দেখছি, হোটেলের বাইরে উন্মত্ত তরুণদের ভিড়। লাঠি-রড নিয়ে দৌড়োদৌড়ি করছে। সকালে হোটেলের তরফেই আমাদের বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছিল। এখানকার খবরের চ্যানেল দেখে পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ করতে পারি সকালেই। এর পর গোটা দিন হোটেলে বসে একটা শহরকে রণক্ষেত্রহতে দেখলাম।
এর আগে অফিসের কাজের প্রয়োজনে একাধিক বার নেপাল এসেছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কোনও দিন পড়িনি। বরাহনগরের বাড়ি থেকে নেপাল এসেছিলাম রবিবার। আমার সঙ্গী সহকর্মী অতনু ঘোষ। ও বেহালায় থাকে। কাঠমান্ডুর হোটেলে উঠি। হোটেলের ন’তলায় আমাদের ঘর। সোমবার থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। তবু কাজে বেরোতে পেরেছিলাম। কিন্তু মঙ্গলবার আর হোটেল থেকে বেরনোর সাহস হয়নি। সোমবার পর্যন্ত রাস্তায় সেনা দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার তাঁদের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা।
তবে ফোনের নেটওয়ার্ক চালু আছে। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছি। নেটওয়ার্ক বন্ধ হলে কী করব জানি না। শুক্রবার আমাদের দু’জনেরই কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি হয়ে কলকাতা ফেরার কথা। এ দিকে মঙ্গলবার থেকে তো বিমান চলাচল বন্ধ। জানি না, ঠিক কী অপেক্ষা করছে!
অনুলিখন: চন্দন বিশ্বাস
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)