E-Paper

সঙ্গী অনাহার ও শীত, জীবনযুদ্ধ চলছে গাজ়ায়

গত কাল থেকে ইয়েমেনে হামাস-সমর্থক হুথি জঙ্গিদের উপর হামলা শুরু করেছে আমেরিকা ও ব্রিটেনের যৌথ বাহিনী। সম্প্রতি লোহিত সাগর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিদেশি জাহাজগুলিকে আক্রমণ করছিল হুথিরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫৪
An Image Of Israel-Palestine Conflict

জানুয়ারির ঠান্ডা ও ভুখা পেট নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন লাখো মানুষ। ছবি: রয়টার্স।

প্রবল শীত। মাথার উপর ছাদ নেই। অস্থায়ী ত্রিপলের ছাউনিতে কোনও মতে রাতটুকু কাটানো। তা-ও রাত কাটবে কি না, সেই অনিশ্চয়তা নিয়েই। যুদ্ধে এ পর্যন্ত ২৩,৮৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে গাজ়া স্ট্রিপে। আরও অসংখ্য দেহ ধ্বংসস্তূপের নীচে পড়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইজ়রায়েলের অবশ্য দাবি, হামাস প্রথম হামলা চালিয়েছিল। তারা আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে। যুদ্ধের একশো দিনের মাথায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন গাজ়া স্ট্রিপে। বিদ্যুৎ নেই। জানুয়ারির ঠান্ডা ও ভুখা পেট নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন লাখো মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ইজ়রায়েলি হামলায়। জখম ৩১২ জন।

গত কাল থেকে ইয়েমেনে হামাস-সমর্থক হুথি জঙ্গিদের উপর হামলা শুরু করেছে আমেরিকা ও ব্রিটেনের যৌথ বাহিনী। সম্প্রতি লোহিত সাগর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিদেশি জাহাজগুলিকে আক্রমণ করছিল হুথিরা। তারই জবাব। এর পর থেকে পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতভর গোলাবর্ষণ চলেছে দক্ষিণ গাজ়া স্ট্রিপের খান ইউনিস এবং রাফায়। ইজ়রায়েলেরই নির্দেশে প্রাণ বাঁচাতে উত্তর গাজ়া থেকে অসংখ্য মানুষ এই অঞ্চলে চলেছে এসেছেন। কিন্তু তার পর থেকে দক্ষিণে বিধ্বংসী হামলা চালানো শুরু করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। গত দু’রাতে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এই অঞ্চলে। জখমের হিসেব নেই। ইজ়রায়েলের দাবি, খান ইউনিসে তারা ৭ জঙ্গিকে হত্যা করেছে। উত্তর গাজ়ার মাঘাজি এলাকায় আরও ২০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তেল আভিভ।

সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, রাফা ও খান ইউনিস শহর জুড়ে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী। সাদা ব্যাগে রাখা মৃত দেহের সামনে দাঁড়িয়ে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কেউ কি আমাদের কথা ভাবছে? কেন সবাই চুপ করে রয়েছেন?’’ একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন রাফার বাসিন্দা ফায়াদ আবু রেলা। রাতের অন্ধকারে এই বাড়িতে এসে পড়েছিল বোমা। ঘুমের মধ্যেই মারা গিয়েছেন অনেকে। ফায়াদ আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘মানুষগুলো তো শুধু বাঁচতে চেয়েছিল। ওদের তো কারও সঙ্গে কোনও যোগ নেই...। ওদের কেন নিশানা করা হল?’’

ইজ়রায়েলর তরফে জানানো হয়েছে, তাদের স্থলবাহিনী ও যুদ্ধবিমান গাজ়ায় ৭০০-রও বেশি রকেট লঞ্চার ধ্বংস করেছে। শুক্রবার থেকে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে গাজ়ায়। অপারেটরের তরফে জানানো হয়েছে, প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের জেরে এই অবস্থা। ২৩ হাজারের বেশি মৃত্যুর বোঝা কাঁধে নিয়েও লক্ষ্যে অবিচল ইজ়রায়েল। তারা জানিয়েছে, হামাসকে নিশ্চিহ্ন না করা ইস্তক যুদ্ধ থামবে না।

দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যার মামলা চলছে, সেই প্রসঙ্গ টেনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্ডোয়ান বলেছেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি ইজ়রায়েলকে দোষী সাব্যস্ত করা
হবে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-এর উপর আমাদের আস্থা আছে।’’ জবাবে ইজ়রায়েলের বিদেশ মন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ় বলেছেন, ‘‘যে দেশের আর্মেনিয়ায় গণহত্যা চালানোর মতো অতীত রয়েছে, তারা আবার আমাদের বলছে। তা-ও কোনও প্রমাণ ছাড়া।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Israel-Palestine Conflict gaza Israel-Hamas Conflict

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy