Advertisement
E-Paper

ইজরায়েলে 'গোপন' বৈঠক! ইস্তফা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রীর

প্রীতির বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ ওঠায় গত কয়েক দিন ধরেই তেতেছিল ব্রিটিশ রাজনীতির আঙিনা।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৯
প্রীতি পটেল।

প্রীতি পটেল।

ব্রিটিশ বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী, ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রীতি পটেলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে। অবস্থা এতটাই গুরুতর যে পার্লামেন্টের সদস্যপদও খোয়াতে পারেন প্রীতি। বুধবার প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ফোন পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রীতি আফ্রিকা সফর কাটছাঁট করে তড়িঘড়ি লন্ডনে ফিরে এসেছেন। ইস্তফা দিয়েছেন মন্ত্রিত্ব থেকে।

প্রীতির বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ ওঠায় গত কয়েক দিন ধরেই তেতেছিল ব্রিটিশ রাজনীতির আঙিনা। বুধবার ফের ইজরায়েলের দুই উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে দু’টি গোপন বৈঠকের কথা প্রকাশ্যে আসায় নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে তাঁকে নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ প্রীতি স্বীকারও করে নিয়েছেন। ফলে ক্যাবিনেটের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে প্রীতিকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী মে। ।

জুলাই মাসে নিজের খরচে পরিবারের সঙ্গে ইজরায়েল ভ্রমণে গিয়েছিলেন প্রীতি। কিন্তু জানা গিয়েছে, তা কোনও সাধারণ সফর ছিল না। ইজরায়েলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে ১২টি গোপন বৈঠক করেন প্রীতি। সেই তালিকায় ছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু-ও। অভিযোগ, একটি বৈঠকের কথাও ইজরায়েলে ব্রিটিশ দূতাবাসকে জানাননি প্রীতি। কিছু জানত না ১০, ডাউনিং স্ট্রিট-ও।

এই বৈঠকগুলির কথা প্রকাশিত হয়ে গেলে প্রীতি প্রথমে বলেছিলেন, বিদেশমন্ত্রী বরিস জনসন ইজরায়েলি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা জানতেন। পরে অবশ্য তাঁর সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন প্রীতি। কিন্তু এর পরে আরও দু’টি গোপন বৈঠকের কথা তিনি ফের বেমালুম চেপে যান। এই বৈঠক দু’টি হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। প্রথমে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চত্বরেই ইজরায়েলের জননিরাপত্তা মন্ত্রী গিলাদ এর্দানের সঙ্গে গোপনে বৈঠক সারেন প্রীতি। এক সপ্তাহের মধ্যেই নিউ ইয়র্কে ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক ইয়ুভাল রটেমের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠকটি করেন। নিয়ম ভেঙে বৈঠক দু’টির একটির কথাও তিনি প্রশাসনকে জানাননি।

ইজরায়েলে থাকাকালীন সে দেশের সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে গোলান উচ্চভূমিতে গিয়েছিলেন প্রীতি। যা পুরোদস্তুর নিয়মবিরুদ্ধ, কারণ এই এলাকাকে ইজরায়েলের অংশ বলেই মানে না ব্রিটেন। বর্তমানে ইজরায়েলের দখলে থাকা গোলান উচ্চভূমি এক সময় সিরিয়ার অংশ ছিল। বিতর্কিত এই এলাকা নিয়ে মাথা না ঘামানোর নির্দেশ জারি ছিল ব্রিটিশ আধিকারিকদের উপরে। বিরোধী শিবিরের দাবি, ইজরায়েল সেনা পরিচালিত একটি হাসপাতালকে ব্রিটেনের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিষয়ে ইজরায়েলি মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রীতি।

অগস্টের ওই ১২টি বৈঠকের কথা প্রকাশ্যে আসায় সোমবার প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র কাছে ক্ষমা চান প্রীতি। প্রীতির দাবি ছিল, উৎসাহের বশেই এই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। তবে ওই ১২টি বৈঠকের কথা মেনে নিলেও এ দিন সেপ্টেম্বরের বৈঠক দু’টির কথা বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন প্রীতি।

ব্রিটেনের রাজনীতির আঙিনায় প্রীতি পটেল আদৌ নতুন মুখ নন। বরং ভারতীয় বংশোদ্ভুত রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনিই বেশি পোড়খাওয়া। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ঘনিষ্ঠও বটে। ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন দফতর-সহ বিদেশ সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ভার এখন তাঁরই হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ, অপ্রীতিকর প্রশ্নের কাঁটা এড়াতেই তড়িঘড়ি কেনিয়া সফরে চলে যান প্রীতি। সেই সফর থেকেই ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে।

প্রীতির পদত্যাগের দাবিতে সরব হন বিরোধীরা। ক্ষোভ বাড়ছে দলের অন্দরেও। ফলে ঘরে বাইরে চাপের মুখে মে। প্রীতির রাজনৈতিক ভাগ্যের চাকা এখন কোন দিকে গড়াবে, নির্ভর করছে মে-র উপরেই।

Priti Patel Indian-born London
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy