দুর্গাপুজো হিন্দুদের অন্যতম প্রধান উৎসব। সিঙ্গাপুরে এই বর্ণিল উৎসবটি ভারতীয় প্রবাসী ও স্থানীয়দের একত্রিত করে ভক্তি, ভালবাসা ও আনন্দের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
২০২৫ সালে, সিঙ্গাপুরে আটটি দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি পরিচালিত হবে পুজো কমিটির মাধ্যমে। এই আয়োজন সম্পূর্ণ কমিউনিটি-ভিত্তিক ও অ-বাণিজ্যিক, যা পরিবার এবং স্বেচ্ছাসেবকদের অবদানের ওপর নির্ভরশীল। পুজোর জন্য পুরোহিতদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হলো পুজো পরিক্রমা, যেখানে বাসে চড়ে ভক্তেরা বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে প্রতিটি পুজোর থিম ও সাজসজ্জার বৈচিত্র উপভোগ করেন। যদিও মণ্ডপগুলি আকারে ছোট, কিন্তু আনন্দে ভরপুর।
উৎসবের প্রস্তুতিতে সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাঙালি মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা হাতে তৈরি বিভিন্ন সাজসজ্জা এবং ঐতিহ্যবাহী বরণ ডালা সাজান। তাঁদের এই উৎসাহ ও উদ্যোগ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পুরোনো রীতিনীতি সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে এবং তরুণ প্রজন্মকে তাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করে। দুর্গাপুজো হলো পুজোর আচার ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির এক অপূর্ব সমন্বয়। সকালে পুষ্পাঞ্জলি, সন্ধ্যায় আরতি, আর পরে গান, নৃত্য ও নাটকের পরিবেশনা উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলে। মেয়েরা নিজেরাই তৈরি করে বিক্রি করেন চপ, ঘুগনি, এগ রোল, ফুচকা ইত্যাদি, যা উৎসবের স্বাদকে বাড়িয়ে তোলে। সুস্বাদু বাঙালি খাবার যেমন খিচুড়ি, লুচি, বেগুনী এবং মিষ্টি যেমন সন্দেশ ও রসগোল্লাও পরিবেশিত হয়।
কিছু কিছু কমিটি প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে একই প্রতিমা কয়েক বছর ব্যবহার করেন। আবার কোনও কোনও কমিটি বৃদ্ধাশ্রমে খাবার পাঠান, যা উৎসবের আনন্দকে আরও অর্থবহ করে তোলে। এখানকার রামকৃষ্ণ মিশন এক অনন্য উপায়ে এই উৎসব পালন করে থাকে। প্রতিমার পরিবর্তে দেবীর একটি ছবি ব্যবহার করা হয় এবং ভক্তিমূলক গানের মাধ্যমে দেবীকে আহ্বান জানানো হয়। তার পরে সকলের জন্য এক বিশাল ভোজেরও আয়োজন করা হয়। ঢাকের তালে আর ‘জয় মা দুর্গা’ ধ্বনিতে মুখরিত সিঙ্গাপুরে দুর্গাপুজো হয়ে ওঠে ভক্তি, ঐক্য ও ঐতিহ্যের উৎসব।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)