দক্ষিণ জার্মানির মার্সিডিজ় আর পোর্শের শহর স্টুটগার্ট এ বার ক’দিনের জন্য রূপ নেবে কলকাতার দুর্গোৎসব মেলা প্রাঙ্গণের। প্রবাসে থেকেও এখানকার বাঙালিরা প্রাণের উৎসবকে পরিপূর্ণ ভাবে ফিরিয়ে এনেছেন, সঙ্গে রেখেছেন সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মিলনমেলার আবহ।
দুর্গাপুজোকে ঘিরে এক অনন্য আবহ তৈরি হয় স্টুটগার্টে। প্রবাসের শহরে বেজে ওঠে মায়ের আগমনী সুর। স্টুটগার্টের প্রথম দুর্গাপুজো গাঙ্গুলী বাড়ির পূজা। এ ছাড়া দেবী, বিন্দি ক্লাবের দুর্গাপুজোও রয়েছে। মৈত্রী ক্লাবের আয়োজন এ বারের অন্যতম বড় আকর্ষণ। কলকাতার প্রতিমা, মণ্ডপ, আলোকসজ্জা, ঢাকের বাজনা, ধুনুচি নাচ আর সন্ধ্যারতি—সব মিলিয়ে যেন ছোট্ট এক ‘কুমোরটুলি’ তৈরি হয়েছে ইউরোপের বুকে। পঞ্চবার্ষিকী উপলক্ষে ক্লাবের সদস্যেরা এ বারের পুজোকে বিশেষ মাত্রা দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। চার দিন ধরে সকাল-বিকেল মিলিয়ে প্রায় বারোশোরও বেশি মানুষ এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।
খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনও কম নয়। দুপুরে থাকছে মুগ ডালের খিচুড়ি ঘি-র ঘ্রাণে ভরা, সঙ্গে আলুভাজা আর পাঁচমিশালি তরকারি। সন্ধ্যার আসরে রসনাতৃপ্তির ভোজ— মচমচে মুরগির উইংস, পনির পাকোড়া, ফিশ অমৃতসরি ফ্রাই, চিকেন কোর্মা, পনির কোর্মা। মিষ্টিপ্রেমীদের জন্য থাকছে ডাব সন্দেশ, নলেনগুড়ের মিষ্টি, ক্ষীর আর কেশরী হালুয়া। সব মিলিয়ে প্রবাসে থেকেও এ যেন খাঁটি বাংলার স্বাদ, তার সঙ্গে একটু ‘বিশ্বায়নের ছোঁয়া’ দিতে হট চকোলেট ব্রাউনি।
উৎসবের আবহে সদস্যরাই নিয়েছেন নানা দায়িত্ব। পৌরহিত্য থেকে শুরু করে আয়োজনের প্রতিটি ধাপে তাঁদের আন্তরিকতা স্পষ্ট। পুজোর মঞ্চে থাকবে ধুনুচি নাচ, ফ্যাশন শো, গান-বাজনা আর হাসি-আড্ডা। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে নাট্য পরিবেশনা— পরশুরামের ‘বিরিঞ্চি বাবা’। ছোটরাও অংশ নিচ্ছে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ পরিবেশনায়, প্রবাসে থেকেও যাদের কাছে এ এক সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন।
দুর্গাপুজোর মাধ্যমে মানুষে-মানুষে বন্ধন তৈরি করাই আমাদের পুজোর উদ্দেশ্য। তার সঙ্গে চাই, বাংলার শিল্প-সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে আরও উজ্জ্বল করে তুলে ধরতে। আর প্রার্থনা, মায়ের আশীর্বাদে ভরে উঠুক সবার মন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)