এইচ-১বি ভিসার নিয়মে বিস্তর বদল এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী বছরের শুরু থেকেই চালু হতে চলেছে সেই নিয়ম। তার আগে ফের মার্কিন প্রশাসন জানাল, এখন থেকে বিদেশি কর্মীদের এইচ-১বি ভিসা প্রদানের নীতি বদলাচ্ছে। অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মীরা এখন থেকে কয়েক বছরের জন্য মার্কিন মুলুকে আসতে পারবেন। সেখানে আমেরিকান কর্মীদের ‘প্রশিক্ষণ’ দেবেন তাঁরা। প্রশিক্ষণ শেষে অবশ্য তাঁদের আর আমেরিকায় থাকা হবে না। ফিরে যেতে হবে নিজ নিজ দেশে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন এইচ-১বি ভিসা নীতির লক্ষ্য হল বিদেশি শ্রমিকদের উপর দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরতার পরিবর্তে উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের এনে আমেরিকানদের চাকরির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ানো, যাতে তাঁরাও সমান দক্ষ হয়ে ওঠেন। সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ়কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাজস্বসচিব স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, এখন থেকে শুধু দক্ষ বিদেশি কর্মীদের সাময়িক ভাবে আমেরিকায় আনা হবে। স্কট বলেন, ‘‘গত প্রায় ২০-৩০ বছর ধরে আমরা বাইরে থেকে উৎপাদন শিল্পের জন্য লোক এনেছি। ফলে আমরা বুক ঠুকে বলতে পারি না যে রাতারাতি জাহাজ তৈরি করে ফেলতে পারব। আমরা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকেও আমেরিকায় ফিরিয়ে আনতে চাই। তাই মার্কিন উৎপাদন খাতকে পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যেই এই নতুন নীতি।’’
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, এক দিন আগেই সুর নরম করে ট্রাম্প বলেছিলেন, আমেরিকার নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সত্যিই বিদেশি প্রতিভা আনা প্রয়োজন। কারণ, এখনও বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্ঞান ও দক্ষতার নিরিখে পিছিয়ে রয়েছেন আমেরিকার কর্মীরা। সেই মন্তব্যেরই ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্কট। তিনি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি হল বিদেশি কর্মীদের তিন, পাঁচ বা সাত বছরের জন্য মার্কিন মুলুকে নিয়ে আসা। সেখানে মার্কিন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন তাঁরা। তার পর দেশে ফিরে যাবেন এবং তাঁদের জায়গায় মার্কিন কর্মীরা দায়িত্ব গ্রহণ করবে।’’ এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত এই নতুন নীতিকে ‘জ্ঞান আদানপ্রদানের প্রচেষ্টা’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন স্কট।
প্রসঙ্গত, এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নিয়মে গত কয়েক মাসে একের পর এক বদল এনেছে আমেরিকা। জানানো হয়েছে, এখন থেকে এই ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির কাছ থেকে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) নেওয়া হবে। তবে যাঁদের ইতিমধ্যেই এইচ-১বি ভিসা রয়েছে, তাঁদের দেশে পুনঃপ্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও টাকা দিতে হবে না। কেবলমাত্র যাঁরা নতুন করে এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাঁদের জন্য সংশ্লিষ্ট মার্কিন সংস্থাকে এক লক্ষ ডলার দিতে হবে সরকারকে। শুধু তা-ই নয়, প্রচলিত লটারি ব্যবস্থা বাতিল করে একটি নতুন বাছাইয়ের প্রক্রিয়াও চালু করতে চলেছে আমেরিকা।