ফের সরকার বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। সরকারের নতুন আর্থিক নীতির বিরোধিতায় আজ হাজার হাজার মানুষ দেশ জুড়ে পথে নেমেছিলেন। কিছু দিন আগে ‘ব্লোকোঁ তু’, অর্থাৎ, সব কিছু বন্ধ করে দাও— সমাজমাধ্যমে এই ডাক দিয়েই ফ্রান্সের রাস্তায় নেমেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। তার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ ফের বিক্ষোভে উত্তাল দেশ। অবশ্য এ দিনের বিক্ষোভের আয়োজন ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত। সম্প্রতি জাতীয় বাজেট ঘোষণার পরে সেটিকে ‘নির্মম’ আখ্যা দিয়ে কিছু দিন আগে আজকের দিনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল ফ্রান্সের আটটি প্রধান বাণিজ্য সংগঠন। গোয়েন্দা সূত্রের খবর ছিল, আজ দেশ জুড়ে ৬ থেকে ৯ লক্ষ মানুষ জমায়েত করতে পারেন। শুধুমাত্র প্যারিসেই পথে নামতে পারেন এক লক্ষ মানুষ। তবে প্রশাসনের দাবি, তার থেকে কম লোক এ দিন পথে নেমেছিল।
দেশ জোড়া ক্ষোভের মুখে সপ্তাহ খানেক আগে আস্থা ভোটে হেরে ইস্তফা দিতে হয় ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেরুকে। তার পরে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ প্রধানমন্ত্রী করেন সেবাস্তিয়্যাঁ ল্যকোর্নুকে। ক্ষমতায় এসেই নতুন প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত নানা নীতির মধ্যে সরকারি ছুটি কমানোর প্রস্তাবটি বাতিল করে দেন। তবে চিকিৎসার খরচ কমানো, মূল্যবৃদ্ধি, বেতন বাড়ানোর দাবি, পেনশন নীতির মতো বিষয়ে তিনি মুখ খোলেননি। ফলে প্রশাসনে রদবদল ঘটিয়েও আজ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ রোখা গেল না।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ সকাল ১১টার মধ্যে ২৩০টি জায়গায় বিক্ষোভ দেখান মানুষ। দুপুরের মধ্যে ৯৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩২ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে আজ আহত হয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক।
এ দিন দিনভর বিক্ষোভের জেরে ব্যাহত হয় যান চলাচল। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় স্কুলগুলিকে। প্রাথমিক স্কুলের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কর্মী এবং হাইস্কুলের প্রায় অর্ধেক শিক্ষক এবং কর্মচারী এ দিনের বিক্ষোভে শামিল হন। ফলে অনেক স্কুলেই পঠনপাঠন বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি ছিল প্রশাসনও। ফ্রান্স জুড়ে প্রায় ৮০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছিল মাকরঁ সরকার। প্যারিসের পুলিশ প্রধানের দাবি, অতিবামপন্থীদের উস্কানিতেই প্রতিবাদ কিছু কিছু জায়গায় হিংসাত্মক চেহারা নেয়। তবে পুলিশি তৎপরতায় তা রুখে দেওয়া গিয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)