হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ আটক তরুণীর মৃত্যু। —ফাইল ছবি
হিজাব বিতর্কে জ্বলছে ইরান। হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ আটক তরুণীর থানায় রহস্যজনক মৃত্যুর পর প্রতিবাদে পথে নেমেছেন সে দেশের সাধারণ মানুষ। দেশ জুড়ে ক্ষোভের আঁচ উত্তরোত্তর বাড়ছে। বুধবারও ইরানের রাস্তায় দেখা গিয়েছে সেই গণক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তায় বুধবার বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। সেই সঙ্গে সরকার-বিরোধী স্লোগানও ওঠে। দেশে মেয়েদের কঠোর পোশাকবিধির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। রাজপথে তাঁদের প্রতিবাদে পুলিশ বাধা দিতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয় বলে খবর।
ইরানের ১৫টি শহরে মাহশার মৃত্যুর প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ, হাজার মানুষের জমায়েতকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়েছে পুলিশ। চলেছে ধরপাকড়ও।
২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যু ইরানে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি হিজাব দিয়ে মাথার চুল পুরোপুরি ঢাকেননি। তাই তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে আটক করে পুলিশ। পরে থানাতেই মৃত্যু হয় মাহশার। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। কিন্তু ক্ষোভ তাতে প্রশমিত হয়নি। অভিযোগ, থানায় পুলিশ নির্যাতন করে মাহশাকে মেরে ফেলেছে।
ইরানের মেয়েরা মাহশার মৃত্যুর পর হিজাব পুড়িয়ে, মাথার চুল কেটে ফেলে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। সমাজমাধ্যম জুড়েও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। দেশের পুলিশের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইরানের মেয়েদের একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইরান পুলিশের পাল্টা দাবি, আটক হওয়া অন্য নারীদের সঙ্গে অপেক্ষা করার সময়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন আমিন। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
ইরানের শরিয়া আইন অনুযায়ী, নারীরা তাঁদের চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা-ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য। যাঁরা এ আইন মানেন না, তাঁরা জনসাধারণের তিরস্কারের যোগ্য। পুলিশ তাদের জরিমানা বা গ্রেফতারও করতে পারে। এই আইনের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা দেশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy