Advertisement
E-Paper

পাক-বাংলাদেশ সখ্য বৃদ্ধিতে ভারতের চিন্তায় পড়ার যথেষ্ট কারণ আছে! দাবি হাসিনা-পুত্র জয়ের

হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সামরিক ক্ষেত্রেও সহযোগিতা শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:০৩
(পিছনে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় (সামনে)।

(পিছনে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় (সামনে)। — ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সখ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠতে পারে। এমনটাই মনে করছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর দাবি, আওয়ামী লীগের সরকার ভারতের পূর্ব সীমান্তকে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদীদের থেকে সুরক্ষিত রেখেছিল। তার আগে ভারতে বিভিন্ন বিদ্রোহের জন্য বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করা হত। সেই পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন হাসিনা-পুত্র।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পুত্র বর্তমানে থাকেন আমেরিকায়। সম্প্রতি ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে ইমেলে একটি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সেটি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক টানাপড়েনের কথাও উঠে আসে। ওই সাক্ষাৎকারেই জয়ের দাবি, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাওয়া ভারতকে চিন্তায় ফেলতে পারে।

ইউনূস সরকারের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি ভারতের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত। আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের পূর্ব সীমান্তকে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে সুরক্ষিত রেখেছিল। এর আগে ভারতে বিদ্রোহ ঘটানোর জন্য বাংলাদেশকে ঘাঁটি হিসাবেব্যবহার করা হত। সেই পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে।”

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে ভারত এবং এই উপমহাদেশীয় অঞ্চল কী ধরনের উদ্বেগ তৈরি হতে পারে, তা-ও ওই সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে জয় বলেন, “বাংলাদেশে ইতিমধ্যে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে উঠেছে। আল-কায়েদার সদস্যরা সেখানে সক্রিয় রয়েছে। পাকিস্তানের লশকর-এ-ত্যায়বার কমান্ডারেরা সেখানে প্রকাশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন। ফলে ভারতের জন্য একটি আসন্ন এবং অত্যন্ত বাস্তব হুমকি রয়েছে।”

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরানোর বিষয়ে ভারতের কী ভূমিকা থাকতে পারে, তা নিয়েও ওই সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয় জয়কে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলি যাতে সরব হয়, সে বিষয়ে ভারতকে আরও সক্রিয় হতে হবে। (বাংলাদেশের) সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগ এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার মানে দেশের অর্ধেক ভোটারকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা। এই নির্বাচনে কারচুপি হতে চলেছে।”

আগামী বছরেই বাংলাদেশে নির্বাচন রয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পরে এই নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে। রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলে নির্বাচনেও যে অংশগ্রহণ করা যাবে না, তা-ও একপ্রকার বুঝিয়ে দিয়েছে সে দেশের নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত সবসময় বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে। বিবৃতিতে নয়াদিল্লি বলেছিল, “আমরা আশা করি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার (বাংলাদেশের) অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষপ করবে।”

বুধবার ভারতে কর্তব্যরত বাংলাদেশ হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। তার কিছু ক্ষণ পরেই বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, এটা নিয়ে আমরা প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না। এখন সামনে আমরা একটা ভাল নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে তো আমাদের নসিহত (উপদেশ) দেওয়ার তো কোনও প্রয়োজন নেই।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারত আমাদের এটা (নির্বাচন) নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। একে আমি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে করি। তারা (ভারত) জানে এর আগে গত ১৫ বছর যে সরকার ছিল, তাদের সঙ্গে (ভারতের) অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। ওই সময় নির্বাচনগুলো যে প্রহসনমূলক হয়েছিল, সে সময় তারা (ভারত) একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি।”

সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতা হাসনাত আবদুল্লার কিছু মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। এক বক্তৃতায় ‘সেভেন সিস্টার্স’কে ভারতের মানচিত্র থেকে আলাদা করে দেওয়ার আহ্বান করেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেবে বাংলাদেশ, এমনও বলেন। বাংলাদেশের ওই নেতা এর আগেও বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।

‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপেস’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি নিয়েও মুখ খোলেন জয়। তিনি বলেন, “আইনি প্রত্যর্পণের জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মানা উচিত। বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়ার যথেষ্ট অভাব ছিল। মাকে নিজস্ব আইনজীবী নিয়োগেরও সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই আমার মনে হয়, ভারতের কিছু করা উচিত নয়।”

Bangladesh Sheikh Hasina dhaka Sajeeb Wazed Joy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy