Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Quad

India-Russia relationship: ভারত-রাশিয়া সম্পর্কে এখন কোয়াডের মেঘ

মস্কোর বক্তব্য, আমেরিকার সহচর হয়ে সমুদ্রপথে নয়াদিল্লি কোয়াড-এর মাধ্যমে চিন ও রাশিয়া-বিরোধী নীতি নিচ্ছে।

অজিত ডোভাল তাঁকে বুঝিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত চিন-নির্ভরতা ভারতের জন্য প্রবল সমস্যার।

অজিত ডোভাল তাঁকে বুঝিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত চিন-নির্ভরতা ভারতের জন্য প্রবল সমস্যার। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২২ ০৫:৫৬
Share: Save:

কোয়াড নিয়ে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সামান্য হলেও বেসুর শোনা যাচ্ছে। মস্কোর বক্তব্য, আমেরিকার সহচর হয়ে সমুদ্রপথে নয়াদিল্লি কোয়াড-এর মাধ্যমে চিন ও রাশিয়া-বিরোধী নীতি নিচ্ছে। ভারতের পাল্টা, কোয়াড সকলের জন্য, কারও বিরুদ্ধে নয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে ভারত এখনও পর্যন্ত ভারসাম্যের কূটনীতি বজায় রেখেছে। আমেরিকা এবং পশ্চিমের সুরে সুর মিলিয়ে ভারত কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়ার নিন্দা করেনি। বরং ইউক্রেনে হামলা বন্ধের জন্য বারবার আর্জি জানিয়েছে।

সব মিলিয়ে এখনও রাশিয়ার থেকে সস্তায় অশোধিত তেল আমদানির পথ নয়াদিল্লির জন্য সুগম রয়েছে ঠিকই। কিন্তু যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, চিনের উপর রাশিয়ার নির্ভরতা তত বাড়ছে। ফলে পাল্লা দিয়ে অস্বস্তি ও সমস্যা বাড়ছে ভারতের। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আর কত দিন ভারত পশ্চিম বিশ্ব এবং রাশিয়ার সঙ্গে সমান্তরাল লাভজনক কূটনীতি চালিয়ে যেতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।

সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মস্কো গিয়ে রাশিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিকোলাইন পাট্রুশেভের সঙ্গে বৈঠক করেন। ডোভাল তাঁকে বুঝিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত চিন-নির্ভরতা ভারতের জন্য প্রবল সমস্যার। দু বছরের বেশি হয়ে গেলও চিনের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাত-পরিস্থিতি কাটেনি এবং অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও চিনা সেনা পিছু হটছে না। সুতরাং মস্কোর বেজিং-প্রীতি নয়াদিল্লিকে বাধ্য করবে আমেরিকার দিকে যেতে। ডোভাল আরও বলেছিলেন, ভারতের কৌশলগত মিত্র রাশিয়া এবং পশ্চিম ব্লকের কারণে এই অবস্থান থেকে ভারত পিছু হটতে চায় না।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মস্কোর পক্ষে বেজিংকে বাদ দিয়ে কোনও বিদেশনীতি প্রণয়ন সম্ভব নয়। গত কালই তাসখন্দে এক বক্তৃতায় রাশিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকা এবং তার শরিকেরা নিজেদের ব্লক তৈরির চেষ্টা করছে। তাতে যত বেশি সম্ভব দেশকে ঢোকানোর চেষ্টা করছে তারা। এই নীতি রাশিয়া-বিরোধী এবং চিন-বিরোধী।

আমেরিকা, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার এই চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের দিকে আগেও রাশিয়া আঙুল তুলেছে। মস্কোর বক্তব্য, কোয়াডকে ব্যবহার করে আমেরিকা সমুদ্রপথে নেটোর সম্প্রসারণ চায়। সম্প্রতি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্যাঙ্ককের একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলই কোয়াড-এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে। তাঁর বক্তব্য, “যদি কোয়াড নিয়ে কারও সন্দেহ হয়ে থাকে, তা হলে তার জন্ম অন্যের স্বাধীনতায় ও পছন্দে ভেটো দেওয়ার মানসিকতা থেকে। সামগ্রিক এবং সম্মিলিত উদ্যোগে জল ঢালার একতরফা চেষ্টা।”

শুধু চিনকে নয়, এই বার্তা রাশিয়াকেও দিতে চেয়েছেন জয়শঙ্কর। বিষয়টি নিয়ে চাপানউতোর বাড়তে থাকলে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য বলে মনে করেন কূটনীতিকদের একাংশ। কারণ কোয়াড থেকে কোনও অবস্থাতেই সরে দাঁড়াবে না ভারত। চিনের সঙ্গে বৃহত্তর ভূকৌশলগত দ্বন্দ্বে আমেরিকাকে ভবিষ্যতে আরও বেশি করে প্রয়োজন পড়বে ভারতের। তা ছাড়া, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একচেটিয়া বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত আধিপত্যের প্রয়াসে, অন্য দেশের মতো ভারতেরও ক্ষতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Quad Russia Ajit Doval
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE