ডেরায় ঢুকে ফের আইএসের সঙ্গে ‘সম্পর্ক পাতাতে’ চাইছে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি)। সিরিয়া এবং ইরাকে এক কোটিরও বেশি মানুষের জীবনযাপন এই মুহূর্তে সরাসরি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের লাগাতার বিমান হানা। ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’র কারণে তাই সিরিয়া-ইরাকে কোনও মানবাধিকার সংগঠনেরই প্রবেশাধিকার নেই। রেড ক্রস তবু এরই মধ্যে নির্বিবাদে কাজ করতে চাইছে জঙ্গি কবলে থাকা পশ্চিম এশিয়ার এই বিস্তীর্ণ এলাকায়।
এই আর্জি অবশ্য এ বারই প্রথম নয়। সিরিয়ায় প্যালেস্তাইনি উদ্বাস্তু শিবিরে কাজ করতে চেয়ে গত সেপ্টেম্বরেই জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনা চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছিল রেড ক্রস। সূত্রের খবর, আংশিক ভাবে হলেও ফলপ্রসূ হয়েছে সেই আলোচনা। জেনিভা সম্মেলনের আগে সিরিয়া-ইরাকে ত্রাণের কাজে তাই ফের আশার আলো দেখছেন রেড ক্রস কর্তৃপক্ষ।
সংগঠনের কর্তা জেভেস ডাকোর্ডের কথায়, ‘‘যুদ্ধের মাটি কামড়ে পড়ে থাকা এই এক কোটি মানুষের কথাই আমাদের সব চেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে। এঁদের সমস্যা কোথায়, ভবিষ্যৎ কী— কিছুই জানা নেই। তাই প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেই আমরা ত্রাণের কাজে এগোতে চাইছি।’’
কিন্তু জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনার কি সত্যিই প্রয়োজন আছে? জেভেসের দাবি, ‘‘আলোচনা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। জঙ্গিরা সশস্ত্র। এলাকা দখলের লড়াইয়ে মত্ত। এই পরিস্থিতি কোনও সংগঠন ঝড়ের মতো নিজের মতো কাজ করে চলে যাবে— এমনটা ভাবার কোনও অর্থ নেই।’’ তবে আলোচনার টেবিলে আইএসকে রাজি করানো যে সহজ নয়, মানছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘নাইজেরিয়া বহু দিন ঘরেই বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠীর কব্জায়। সেখানেও দীর্ঘ আলোচনার পরেই ত্রাণের কাজে ‘প্রবেশাধিকার’ পাওয়া গিয়েছে।’’ ঠিক পথে এগোলে আইএসের তরফেও ইতিবাচক সাড়া মিলবে বলে আশা করছেন জেভেস। তবে সমাজ-বদল কিংবা নীতিগত বিরোধের কথা বলে জঙ্গিদের টলানো যাবে না। মানবিকতার আলোচনাতেই একমাত্র রফাসূত্র মিলবে বলে ইঙ্গিত তাঁর।