প্রতীকী ছবি।
ফের চমক রাশিয়ার। ‘স্পুটনিক ভি’-র পরে তাদের তৈরি দ্বিতীয় করোনা প্রতিষেধকটি একেবারে ১০০ শতাংশ কার্যকর বলে মঙ্গলবার দাবি করল মস্কো। সাইবেরিয়ার ‘ভেক্টর স্টেট রিসার্চ সেন্টার অব ভাইরোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’র তৈরি এই প্রতিষেধকটির নাম এপিভ্যাককরোনা। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরেই প্রতিষেধকটির কার্যকারিতা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভা জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই সাধারণের জন্য টিকা উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে।
গত বছরের শেষে গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘স্পুটনিক ভি’ প্রতিষেধককে বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন হিসেবে ছাড়পত্র দিয়ে চমকে দিয়েছিল রাশিয়া। তবে সে বার তিন পর্যায়ে পরীক্ষা শেষের আগেই তড়িঘড়ি ছাড়পত্র দেওয়ায়, প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার। এ বার আর ঝুঁকি নেয়নি রাশিয়া। রীতিমতো পরীক্ষাপর্ব ও তার ফলাফলের খুঁটিনাটি সামনে এনে দ্বিতীয় ভ্যাকসিনের সাফল্য দাবি করেছে তারা। আমেরিকার মডার্না, ফাইজ়ার, বা ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরিযে ভ্যাকসিনগুলি এখন বিশ্বের বাজার দখল করেছে, সেগুলি সর্বোচ্চ ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করেছিল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি। রাশিয়ারও দাবি ছিল, তাদের প্রথম ভ্যাকসিনটি ৯২ থেকে ৯৫ শতাংশ কার্যকর। তবে দ্বিতীয় প্রতিষেধকটি সাফল্যের মাপকাঠিতে বাকিগুলিকে ছাপিয়ে যাবে বলেই তাদের বিশ্বাস।
মস্কো জানিয়েছে, ২০২০ সালের ২৪ জুলাই প্রতিষেধকটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য ভেক্টর রিসার্চ সেন্টারকে ছাড়পত্র দিয়েছিল রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ২৭ জুলাই প্রথম স্বেচ্ছাসেবককে সেটি দেওয়া হয়। ট্রায়াল শেষ হয় ৩০ সেপ্টেম্বর। রাশিয়ার ক্রেতাসুরক্ষা এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নজরদার একটি সংস্থা জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ১৪ জন, দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৪৩ জনের শরীরে প্রতিষেধকটি পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। একইসঙ্গে আরও ৪৩ জনকে প্লাসিবো দেওয়া হয়। ওই স্বেচ্ছাসেবকেরা সকলেই ভাল আছেন। প্রথম দিকে কম থাকলেও সম্প্রতি রাশিয়ায় করোনা সংক্রমণ অনেকটা বেড়েছে। এখনও পর্যন্ত সেখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬৬,০৩৭ জনের। মোট আক্রান্ত ৩৫,৯১,০৬৬ জন।
গত বছর করোনায় প্রথম ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইউরোপের যে দেশটি, সেই ইটালিতে টিকাকরণ শুরু হয়েছে গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে। প্রথম পর্বে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের পাশাপাশি প্রবীণদেরও প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। সোমবার মিলানে ১০৯ বছরের এক বৃদ্ধাকে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হয়। গত বছর করোনাকে জয় করে খবরে উঠে এসেছিলেন ফাতিমা নেগ্রিনি নামে এই প্রবীণা। এ দিন বৃদ্ধাশ্রমে প্রতিষেধক নেন তিনি।
প্রতিষেধকের আশ্বাস থাকলেও করোনাভাইরাসের ঘনঘন চরিত্র বদল বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। সাউথ আফ্রিকায় খোঁজ মেলা ভাইরাসের স্ট্রেনটি মূল স্ট্রেনের থেকে অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্য দিকে, করোনাভাইরাসের উৎস-সন্ধানে ইতিমধ্যেই চিনে পৌঁছে গিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাঠানো বিশেষজ্ঞদের একটি স্বাধীন দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy