Advertisement
E-Paper

সিরিয়ায় বিমান হানা চালাল রাশিয়া

সিরিয়ায় আঘাত হানল রাশিয়ার বায়ুসেনা। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৯:২৫

সিরিয়ায় আঘাত হানল রাশিয়ার বায়ুসেনা। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মার্কিন সেনা সূত্রে খবর, বুধবার সিরিয়ার হোম প্রদেশে আঘাত হেনেছে রাশিয়া। ৮০-র দশকে আফগানিস্তানে অভিযানের পরে এই প্রথম মধ্য-এশিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ করল রাশিয়া।

কিন্তু এই হামলার লক্ষ্য নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। কারণ, হোম-এ আইএস নয়, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদ বিরোধী অন্য গোষ্ঠীগুলির প্রাধান্য রয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে খবর, রাশিয়ার বিমান হামলায় ‘জয়েস আল-ফাতা’ গোষ্ঠীর উপরে হামলা হয়েছে। আসাদ বিরোধী এই গোষ্ঠীটি ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠলেও এদের সঙ্গে আইএস-এর যোগ নেই। পাশাপাশি আমেরিকা-সহ পশ্চিম বিশ্ব সমর্থিত আসাদ বিরোধী গোষ্ঠী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’-র অংশ ‘তাজামৌ আল-ইজ্জা’ উপরেও হামলা হয়েছে।.কয়েক দিন আগে ন্যাটোর সুপ্রিম অ্যালাইড কম্যান্ডর জেনারেল ফিলিপ ব্রিডলাভ জানিয়েছিলেন, রাশিয়া সিরিয়ার সেনা ঘাঁটিতে অতি-উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিমান-বিধ্বংসী ব্যবস্থা ও যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। আইএস-এর উপরে অভিযান চালাতে এই ধরনের ক্ষমতার প্রয়োজন নেই বলেই জেনারেল ব্রিডলাভ জানান। এ দিনই রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সিরিয়ায় অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছে। এর আগে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছিলেন, রাশিয়া সিরিয়ার বিমান অভিযান চালাবে। রাশিয়ার স্থলসেনা এই অভিযানে অংশ নেবে না বলে পুতিন জানান। এ অভিযান দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেও পুতিন আশ্বাস দিয়েছেন। ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, সিরিয়ার পশ্চিমদিকে হোম প্রদেশে এই হামলা হয়েছে। হোমের উত্তরপ্রান্তে মূলত গ্রাম্য অঞ্চলে রাশিয়ার আক্রমণে ২৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ছ’জন শিশুও আছে। এই হামলায় ডজনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ দিন অভিযান চালানোর আগে মার্কিন সেনাকে সিরিয়ায় কোনও ধরনের অভিযান চালাতে বারণ করে রাশিয়া। রাশিয়া জানায়, আমেরিকার-সহ পশ্চিমী বিশ্বের সিরিয়া-অভিযান আন্তর্জাতিক আইনকে উলঙ্ঘন করে। কারণ, কোনও দেশে অভিযান চালাতে হলে হয় সেই দেশের সরকারের অনুমতি প্রয়োজন, নয় তো রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন দরকার। আমেরিকার নেতৃত্বে জোটের কাছে এর দু’টিই নেই। কিন্তু রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদ। এই আক্রমণের ফলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ আরও জটিল হয়ে উঠল।

এর মধ্যেই মার্কিন সেনার সঙ্গে সিরিয়ার অভিযান সংক্রান্ত খবরাখবর ভাগ করে নিতে বাগদাদে তথ্যকেন্দ্র গড়েছে রাশিয়া। ইরাক, ইরান ও সিরিয়ার আসাদ-সরকারের প্রতিনিধিরা এই তথ্যকেন্দের অংশ। এই তথ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা নিয়ে আমেরিকার তার উষ্মাও গোপন রাখেনি। কারণ, পেন্টাগনের কাছে খবর ছিল, দামাস্কাসের কাছে লাটাকিয়া অঞ্চলে ২৫ যুদ্ধবিমান, ১৫টি হেলিকপ্টার, ন’টি ট্যাঙ্ক, তিনটি ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ও বেশ কিছু ড্রোন মোতায়ন করেছে রাশিয়া। রয়েছে প্রায় ৬০০ সেনাও। বেশ কিছু দিন ধরেই রাশিয়ার ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান সিরিয়ায় পর্যবেক্ষণও চালাচ্ছিল। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বরাবরই প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদের পক্ষ নিয়েছে রাশিয়া। আসাদকে এখনও সিরিয়ার বৈধ নেতা বলে মনে করে রাশিয়া। যা মার্কিন নীতির সম্পূর্ণ উল্টো। আসাদকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্যও করেছে রাশিয়া।

এক দিকে ইসলামিক স্টেট, অন্য দিকে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির সাহায্য নিয়ে লড়াই করা বিদ্রোহীরা। দুইয়ের মাঝে ইরান ও রাশিয়ার যৌথ সাহায্যে এখনও ক্ষমতায় টিকে আছেন বাসার আল-আসাদ। কিন্তু সম্প্রতি আসাদের শক্তি হ্রাস পাচ্ছে বলে খবর ছিল। ইরান আর সে ভাবে আসাদের পাশে দাঁড়াচ্ছিল না। ফলে ক্রমেই আরও দূর্বল হয়ে পড়ছিল আসাদ সরকার। এর পরেই দামাস্কাসে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যেতে থাকে। সিরিয়ার রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাসটন কার্টারের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই সোইগুর-র কথাও হয়েছে। সেখানে আসাদকে রাশিয়ার এই সমর্থন নিয়ে আমেরিকার আপত্তির কথা জানিয়েছেন কার্টার। কিন্তু তার পরে আলোচনা বেশি দূর এগোয়নি।

russia air strike syria rebel group asad rebel group russia air strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy