Advertisement
E-Paper

‘ইরানকে পরমাণু অস্ত্র দেওয়ার মতো দেশ আছে’! আমেরিকার ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ হামলার নিন্দা করে কিসের ইঙ্গিত রাশিয়ার?

রবিবারই ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে আমেরিকার হামলার তীব্র নিন্দা করেছে রাশিয়া। এই হামলা শুধু ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ই নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী বলেও জানিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ১৮:৪২
(বাঁ দিক থেকে)  ডোনাল্ড ট্রাম্প, আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এবং ভ্লাদিমির পুতিন।

(বাঁ দিক থেকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এবং ভ্লাদিমির পুতিন। — ফাইল চিত্র।

ইরানকে পরমাণু অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য অনেক দেশই প্রস্তুত! রবিবার ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর এমনটাই দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। সেই আবহে এ বার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ‘জরুরি আলোচনায়’ বসতে মস্কোর উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নানা মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। ইরান-ইজ়রায়েল সম্মুখসমরে আমেরিকার প্রবেশের পরেই আরাগচির রাশিয়া সফরকে ইঙ্গিতবহ বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।

রবিবারই ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে আমেরিকার হামলার তীব্র নিন্দা করেছে রাশিয়া। এই হামলা শুধু ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ই নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী বলেও জানিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। রবিবার রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘এত দিনে এটা স্পষ্ট যে, ভয়াবহ উত্তেজনা বৃদ্ধি শুরু হয়ে গিয়েছে, যা আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে আরও বিঘ্নিত করে। আমেরিকার এই হামলা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনকারী।’’ মার্কিন হামলার তীব্র নিন্দা করেছে ইরানও। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘আমেরিকা যে কোনও নীতির ধার ধারে না, ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে আমেরিকা তা বুঝিয়ে দিল।’’ তবে নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থরক্ষার স্বার্থে মার্কিন সেনার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়াই করার ক্ষমতা যে ইরানের রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে তারা।

এই পরিস্থিতিতে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাগচি জানিয়েছেন, সোমবার পুতিনের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসতে রবিবারই রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তিনি। ইস্তানবুলে একটি সাংবাদিক বৈঠকে আরাগচি বলেন, ‘‘রাশিয়া ইরানের বন্ধু। আমাদের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতিতে আমরা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের অবস্থান স্থির করি।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি বা ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ) হয়েছিল, তাতে পাঁচ শক্তিধর রাষ্ট্রের সঙ্গে ছিল রাশিয়াও। তাতে স্থির হয়, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা বন্ধ রাখলে ইরানের উপর থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে লাভবান হয়েছিল উভয় পক্ষই।

এরই মাঝে আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ। রবিবার মেদভেদেভ বলেন, ‘‘শান্তিস্থাপনের নাম করে আসলে পশ্চিম এশিয়ায় একটি নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন ট্রাম্প।’’ মেদভেদেভ আরও দাবি করেছেন, আমেরিকার হামলায় ইরানের বিশেষ কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সামান্য ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া ইরানের পারমাণবিক জ্বালানি তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলি প্রায় অক্ষতই রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। মার্কিন আক্রমণেরর পরেই মেদভেদেভ নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘ইরানে পারমাণবিক পদার্থের সমৃদ্ধকরণ এবং ভবিষ্যতে পারমাণবিক অস্ত্রের উৎপাদন অব্যাহত থাকবে। বেশ কয়েকটি দেশ ইরানকে সরাসরি নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতেও প্রস্তুত।’’ যদিও পুতিন-ঘনিষ্ঠ ওই নেতা কোন দেশগুলির কথা বলছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অন্য দিকে, ইরানও জানিয়েছে, নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থরক্ষার্থে মার্কিন সেনার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়াই করার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। তার মাঝেই প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্টের এ হেন মন্তব্যে নানা মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা।

Iran Isreal conflict US Donald Trump Russia Vladimir Putin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy