Advertisement
E-Paper

ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করলে পরিণাম হবে ‘ভয়াবহ’! পরমাণু বিপর্যয়ের হুঁশিয়ারি দিয়ে আমেরিকাকে সতর্ক করল রাশিয়া

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পরমাণু শক্তি কর্পোরেশনের প্রধানও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইরানের বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যদি ইজ়রায়েল কোনও রকম হামলা চালায়, তা হলে তার পরিণাম ভাল হবে না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ ২০:০৩

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে ইরানে হামলা চালালে তার ফল হবে ভয়াবহ! বৃহস্পতিবার আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সরাসরি ইরান এবং ইজ়রায়েলের সাংঘাতে আমেরিকাকে এখনই জড়িয়ে ফেলতে চাইছে না। বুধবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তিনি এই সংঘাতে জড়াতেও পারেন, না-ও পারেন। তার পরেই সুর চড়িয়েছিলেন আমেরিকার উপবিদেশমন্ত্রী। এ বার ফের আমেরিকাকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিল রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক। রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই। এই পদক্ষেপ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হতে পারে, যার পরিণাম অকল্পনীয় নেতিবাচক হতে পারে।’’

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পরমাণু শক্তি কর্পোরেশনের প্রধানও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইরানের বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যদি ইজ়রায়েল কোনও রকম হামলা চালায়, তা হলে তার পরিণাম ভাল হবে না। ‘চেরনোবিলের মতো পরিণতি’ হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ১৯৮৬ সালে দু’-দু’টি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ইউক্রেনের চেরনোবিলের পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের পরমাণু চুল্লি। তার পর তেজস্ক্রিয় বিকিরণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে লাগোয়া এক হাজার বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায়।

প্রসঙ্গত, ইজ়রায়েল সেনার এক মুখপাত্র দাবি করেন, বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে তারা। পরে তিনি ওই বিবৃতি ‘ভুল’ বলে জানান। পাশাপাশি জানান, ওই পরমাণুকেন্দ্রে হামলা হয়েছে কি না তা নিশ্চিতও করবেন না, আবার অস্বীকারও করবেন না। এর পরেই রাশিয়ার পরমাণু শক্তি কর্পোরেশনের প্রধান হুঁশিয়ারি দেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স দাবি করেছে, ইরানের বুশেহরই হল একমাত্র পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আর তা তৈরি করেছে রাশিয়াই।

এর আগে বুধবার রাশিয়ার উপবিদেশমন্ত্রী সের্গেই র‌্যাবকভ আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের কাল্পনিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করছি। পুরো পরিস্থিতিকে ঘেঁটে দিতে পারে এই ধরনের পদক্ষেপ।’’ এ বার সেই সুরই শোনা গেল রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জাখারোভার গলায়। তিনি জানান, ইরানের পারমাণবিক পরিকাঠামোর উপরে ইজ়রায়েলের হামলার অর্থ হল, গোটা দুনিয়াকে বিপর্যয় থেকে কয়েক ‘মিলিমিটার’ দূরে দাঁড় করানো। এই নিয়ে তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পৃথিবীর লোকজন কোথায়? পরিবেশবিদেরা কোথায়? আমি জানি না, ওঁরা হয়তো মনে করছেন, এ সবের থেকে ওঁরা অনেক দূরে। তাই এই রেডিয়েশন ওঁদের কাছে পৌঁছোবে না। ফুকুশিমার কথা মনে করুন।’’ তাঁর কথায় ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমার ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।

ট্রাম্প এখনও স্পষ্ট করেননি, তিনি ইরানে সরাসরি হামলা চালাবেন কি না। এই আবহে বুধবার আরব আমিরশাহির পাশাপাশি রাশিয়া ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতে ইতি টানার দাবি তোলে। এই নিয়ে আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট মহম্মদ বিন জ়ায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তা বিবৃতি দিয়ে পরে জানায় ক্রেমলিন। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন পুতিন। বৃহস্পতিবার সেই নিয়ে বিবৃতি দিয়ে রাশিয়ার প্রশাসন জানিয়েছে, ইজ়রায়েলের হামলাকে ‘ধিক্কার’ জানিয়েছেন পুতিন এবং জিনপিং।

গত সপ্তাহেই ইজ়রায়েল এবং ইরানের সংঘাতে ইতি টানতে সক্রিয় হন পুতিন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করেন তিনি। পাশাপাশি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পোজ়েশকিয়ানকেও ফোন করেন। দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন। এই আবহে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, গত ১৭ জুন তাঁকে ফোন করে ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পুতিন। ট্রাম্পের দাবি মোতাবেক, তিনি সেই আর্জি খারিজ করে পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মাথা ঘামাতে বলেন। এই আবহে বৃহস্পতিবার আবার আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিল রাশিয়া।

Vladimir Putin Donald Trump Iran Benjamin Netanyahu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy