খেরসনে নতুন করে শুরু লড়াই। ফাইল চিত্র।
রুশ ফৌজের ধারাবাহিক হামলার মুখে দাঁড়িয়ে এ বার প্রত্যাঘাত করল ইউক্রেন। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত বাহিনী পাল্টা হামলা চালিয়ে দক্ষিণের খেরসন প্রদেশের বেশ কিছু এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের ঘোষণা করার পরেই ডেনিপার নদীর মোহনার বন্দর এলাকা খেরসনে হামলা চালিয়েছিল রুশ বাহিনী। মার্চের গোড়ায় খেরসনের দখল নেওয়ার পর সেখানে ঘাঁটি বানিয়েই কৃষ্ণসাগরের উপকূলবর্তী ওডেসা এবং মারিউপোল শহর দখলের জন্যও আক্রমণের তীব্রতা বাড়ানো হয়েছিল। ফলে খেরসনে ইউক্রেনের প্রত্যাঘাত সামরিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। যদিও মঙ্গলবার রাশিয়ার দাবি, সফল ভাবেই ইউক্রেনের আক্রমণ প্রতিরোধ করা হয়েছে।
যুদ্ধের ছ’মাস পেরিয়ে গেলেও ইউক্রেনের ৩০ শতাংশ এলাকা দখলও নিতে পারেনি রুশ ফৌজ। দক্ষিণের ওডেসা থেকে পূর্বে ডনবাস পর্যন্ত বিভিন্ন ফ্রন্টে সফল ভাবে মস্কোর বাহিনীর মোকাবিলা করছেন জেলেনস্কির অনুগত সেনারা। যুদ্ধের গোড়ায় ইউক্রেনের রাজধানী কিভের অদূরে পৌঁছে গেলেও প্রবল প্রতিরোধের জেরে পিছু হটতে হয়েছিল রাশিয়ার সেনাকে। এর পর পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে (যাদের একত্রে ‘ডনবাস’ বলা হয়) সামরিক অভিযানের তীব্রতা বাড়িয়ে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি মস্কো। অথচ যুদ্ধ ঘোষণার আগেই রুশ জনগোষ্ঠী-গরিষ্ঠ ওই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন পুতিন। গত কয়েক বছর ধরে সেখানে মস্কো-পন্থী সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলি সক্রিয়।
এই পরিস্থিতিতে খেরসনের পাশাপাশি দক্ষিণের মাইকোলিভ এবং উত্তরের খারকিভ শহরের আশপাশ থেকেও রুশ বাহিনীকে তাড়াতে সক্রিয় হয়েছে ইউক্রেন। সেই প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিড়ম্বনায় পড়বে রাশিয়া। চলতি সপ্তাহে পেন্টাগন প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবি, যুদ্ধের প্রথম ছ’মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। দৈনিক গড়ে প্রায় ২০০ জন! আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার পাঠানো অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেন সেনা সঠিক ভাবে ব্যবহারে সক্ষম হয়েছে বলেও ওই রিপোর্টে দাবি। যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে ধাক্কা খেয়েছে রাশিয়ার অর্থনীতিও। এই পরিস্থিতিতে খেরসন হাতছাড়া হলে পুতিন বাহিনী আর কত দিন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy