ক্রিপ্টোকারেন্সির এক্সচেঞ্জের ব্যবসায় ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নতির শিখরে চড়েছিলেন স্যাম ব্যাঙ্কম্যান-ফ্রায়েড। ফাইল চিত্র।
ছিলেন ধনকুবের। তবে এখন তিনি আমেরিকার সরকারের বিশেষ বন্দি। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার অন্যতম বাজিকর স্যাম ব্যাঙ্কম্যান-ফ্রায়েডকে সোমবার তাঁর বাহামাসের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে আমেরিকা।
স্যাম ছিলেন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের অন্যতম বড় এক্সচেঞ্জ এফটিএক্সের প্রতিষ্ঠাতা। এই এফটিএক্সের কাঁধে চড়েই ক্রিপ্টোমুদ্রার দুনিয়ায় উঁচু উড়ান নিয়েছিলেন তরুণ ওয়ালস্ট্রিটের ব্যবসায়ী। গত বছরই ফোর্বসের ধনী তালিকায় নাম উঠেছিল ৩০ বছরের স্যামের। তরুণ অর্বুদপতির সম্পত্তি তখন ছিল ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলারের। সেই স্যামেরই প্রতিষ্ঠান এফটিএক্স গত নভেম্বরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে। সম্প্রতি স্যামের নামেও ওঠে জালিয়াতির অভিযোগ। বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের বিনিয়োগ করা অর্থ স্যাম নিজের একটি ব্যক্তিগত সংস্থায় ঢালছেন। এর পরই তদন্ত এবং আমেরিকান কংগ্রেসের সামনে যুক্তি পাল্টা যুক্তির পর্ব। শেষে আমেরিকার সরকারের নির্দেশে সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করে বাহামাস পুলিশ।
২০১৯ সালে এফটিএক্স প্রতিষ্ঠা করেন স্যাম। বাহামাসেই ছিল সেই সংস্থার দফতর। অল্প সময়েই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলির সমকক্ষ হয়ে উঠেছিল তাঁর সংস্থা। বহু মানুষ ক্রিপ্টোমুদ্রায় বিনিয়োগের জন্য ভরসা করছিলেন তাঁর সংস্থাকেই। সেই স্যামকে কেন গ্রেফতার করা হল, তার ব্যাখ্যা দিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে বাহামাস পুলিশ। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘স্যাম বেশ কিছু অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন, যা আমেরিকার আইন তো ভেঙেছেই। পাশাপাশি কমনওয়েলথ অফ দ্য বাহামাসের সংবিধানেও বেআইনি।’’ যদিও কী সেই অপরাধ, তা স্পষ্ট করা হয়নি ওই বিবৃতিতে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টার সময় গ্রেফতার করা হয় বাহামাসের নাসাউয়ের অ্যালবানি থেকে গ্রেফতার হন স্যাম। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতেও তোলা হয়। তবে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস সূত্রের খবর, আপাতত ক্রিপ্টো সংক্রান্ত জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাঙ্কম্যানকে গ্রেফতার করা হলেও, আসলে প্রশাসনের নজর রয়েছেন ক্রিপ্টো দুনিয়ার আরও বড় খেলোয়াড়দের উপর। এমনকি এই সময়ের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ বিন্যান্সের কর্তার উপরেও নজর রয়েছে তাঁদের।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স আমেরিকার বিচার বিভাগের কয়েক জন কৌঁসুলিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বিন্যান্সের বিরুদ্ধেও দীর্ঘ দিন ধরে তদন্ত চলছে। এই দীর্ঘ তদন্তে বিন্যান্স এবং তার বেশ কয়েক জন শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে বিস্তর তথ্য প্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে। এই সংস্থাটির বিরুদ্ধের অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ক্রিপ্টোমুদ্রার দুনিয়া গত এক বছর ধরেই নানা রকম সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলেছে। ক্রিপ্টোমুদ্রায় বিনিয়োগের জন্য যে এক্সচেঞ্জগুলি কাজ করে, তার মধ্যে প্রথম সারির বহু সংস্থা এখন আর্থিক সমস্যার মুখে। এর মধ্যেই গত নভেম্বরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছিল স্যামের প্রতিষ্ঠিত ক্রিপ্টোএক্সচেঞ্জ এফটিএক্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy