Advertisement
E-Paper

ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিঁড়ে সংঘাতে সৌদি

পশ্চিম এশিয়ার দুই শক্তিশালী রাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব চরমে‌ পৌঁছল। তেহরানে সৌদি দূতাবাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিল সৌদি আরব। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইরানের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সৌদি প্রশাসন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:১৬

পশ্চিম এশিয়ার দুই শক্তিশালী রাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব চরমে‌ পৌঁছল।

তেহরানে সৌদি দূতাবাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিল সৌদি আরব। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইরানের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সৌদি প্রশাসন। ছিন্ন হয়েছে উড়ান যোগাযোগও ।

বিদেশমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর রবিবার গভীর রাতে রাজধানী রিয়াধে সাংবাদিক বৈঠকে জানান, সৌদি আরব ছাড়তে হবে ইরানের প্রতিনিধিদের। দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার কোনও সুযোগ দেওয়া হবে না ওঁদের। ইরানের দূতাবাস ও কনস্যুলেট কর্মীদের সেই বার্তা পৌঁছে দিতে ইরানি দূতকে সমন পাঠানো হয়। জুবেইর বলেন, ‘‘কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে ইরানের। ১৯৭৯ সালে মার্কিন দূতাবাসের দখল নিয়েছিল ওরা। এ বার সৌদি দূতাবাস পোড়াল।’’

সৌদি বিদেশমন্ত্রীর অভিযোগ, দূতাবাস জ্বালানোর ঘটনায় পরোক্ষ মদত ছিল ইরানি প্রশাসনের। আন্দোলনকারীদের সাহায্য করেছিল তারা। হামলার আগে দূতাবাস থেকে কম্পিউটার, গুরুত্বপূর্ণ নথি-পত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি তাঁর। তেহরানের দূতাবাসে যখন ভাঙচুর চলছিল, সৌদি কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা তখন ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের কাছে সাহায্য চেয়েছিল বলে জানিয়েছেন জুবেইর। বলেছেন, তিন তিন বার সাহায্যের আর্জি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তার খাতিরে এখন তাই সৌদি কূটনীতিকদের তেহরান থেকে ফিরিয়ে আনার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সোমবার সন্ধেতেই তেহরান থেকে দুবাই পৌঁছেছেন ৮০ জন সৌদি নাগরিক। তাঁদের বেশির ভাগই সৌদি কূটনীতিক ও তাঁদের পরিবার।

সুন্নি প্রধান সৌদি আরব এবং শিয়া অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলি, বিশেষত আমেরিকার হস্তক্ষেপে দু’পক্ষ আপাত শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করে এসেছে এত দিন। তবে ঠান্ডা লড়াইটা ছিলই। সন্ত্রাস-যোগ থাকার অভিযোগে শনিবার সৌদি আরবে শিয়া ধর্মগুরু শেখ নিমর আল-নিমর-সহ ৪৭ জনের ফাঁসির ঘটনায় ফের তা তেতে ওঠে। শিয়া ধর্মগুরুর ফাঁসির প্রতিবাদে রবিবার তেহরান এবং মাশহাদে দু’-দু’টি সৌদি দূতাবাস পুড়িয়ে দেয় শিয়া বিক্ষোভকারীরা। তারই জেরে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি প্রশাসন। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাহরাইন এবং সুদান। তেহরান থেকে কূটনৈতিক প্রতিনিধি ফিরিয়ে আনছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও।

সম্পর্ক ভাঙার সিদ্ধান্তের জবাব দিয়েছে ইরানও। স্থানীয় চ্যানেলে ইরানের উপ-বিদেশমন্ত্রী হুসেন আমির আবদোল্লাহিয়ান বলেন, ‘‘কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে শেখ নিমরকে হত্যা করার পাপ ঢাকা দিতে পারবে না রিয়াধ।’’ আমিরের মত, দূতাবাসে হামলার মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে দু’দেশের তিক্ততা ফের উস্কে দিতে চাইছে ইরান। উপ-বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক চুক্তির ভিত্তিতে কূটনৈতিক নিরাপত্তা দিতে ইরান দায়বদ্ধ। সৌদি আরব সব সময় অশান্তি চায়। এ বারও তাই করছে।’’ সৌদি দূতাবাস জ্বালানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার ৪০ জনকে আটকও করেছে তেহরান পুলিশ।

ইরান-সৌদি সংঘর্ষে মধ্য এশিয়ায় এখন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা। সোমবারই ইরাকে দু’টি সুন্নি মসজিদে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছে। নিহত হয়েছেন এক ইমাম। পশ্চিম এশিয়ার এই দুই তেল উৎপাদনকারী দেশের চাপান-উতোরের প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারে। সোমবার অপরিশোধিত তেলের দাম ২.৫% বেড়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নেমেছে আমেরিকা, রাশিয়া। সৌদি-বন্ধু আমেরিকা আলোচনার মাধ্যমে দ্বন্দ্ব মিটানোর পরামর্শ দিচ্ছে দু’পক্ষকে। সংঘর্ষ মেটাতে মধ্যস্থতায় যেতে চাইছে রাশিয়াও।

international news iran saudi arabia iran and saudi arabia relation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy