Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

করাচির চিনা কনসুলেটে জঙ্গি হামলা, নিহত ৭

নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘বালোচ লিবারেশন আর্মি’ এই হামলার দায় নিয়ে বলেছে, বালোচের মাটিতে চিনা সেনাবাহিনীর কোনও রকম বা়ড়বাড়ন্ত তারা সহ্য করবে না। 

হামলার পর চীনা দূতাবাসের বাইরে।—ছবি এএফপি।

হামলার পর চীনা দূতাবাসের বাইরে।—ছবি এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
করাচি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

সকাল হতে না হতেই হামলা। শুক্রবার তিন সশস্ত্র আত্মঘাতী জঙ্গি তছনছ করে দিল করাচির চিনা কনসুলেট। শহরের অভিজাত ক্লিফটন এলাকায় এই হামলায় দু’জন পুলিশ-সহ চার জন প্রাণ হারিয়েছেন। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া এই এলাকায় দ্রুত জঙ্গিদের কাবু করে নিরাপত্তা বাহিনী। সংঘর্ষে মারা যায় তিন জঙ্গিই। জখম হয়েছেন এক চিনা নিরাপত্তা রক্ষী।

নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘বালোচ লিবারেশন আর্মি’ এই হামলার দায় নিয়ে বলেছে, বালোচের মাটিতে চিনা সেনাবাহিনীর কোনও রকম বা়ড়বাড়ন্ত তারা সহ্য করবে না।

এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছে পাকিস্তান, চিন এবং ভারত। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। চিন তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সম্প্রতি বেজিংয়ে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে ইমরানের। পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত সহযোগিতা নষ্ট করতেই এই হামলা। ইমরানের কথায়, ‘‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর-এর (সিপিইসি) কাজ নষ্ট করা এবং চিনা বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ানোই লক্ষ্য জঙ্গিদের। তাতে ওরা মোটেই সফল হবে না।’’ চিনের বিদেশ মন্ত্রকও মিত্র-দেশকে বলেছে, পাক মাটিতে চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করুক তারা। এই মুহূর্তে করাচি ও বালুচিস্তানে কয়েকশো চিনা নাগরিক সিপিইসি-তে কাজ করছেন। করাচিকে চিনারা নিরাপদ শহর হিসেবে মনে করে। চিনাদের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজুতও থাকে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদের কোনও ব্যাখ্যা হয় না। যারা এই জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের কড়া শাস্তি প্রয়োজন। এই ধরনের হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের লড়াই আরও সঙ্ঘবদ্ধ হবে।’

করাচির পুলিশপ্রধান আমির শেখ জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন সাধারণ নাগরিক, এক বাবা ও তাঁর ছেলে। জঙ্গিরা কনসুলেটে ঢোকার সময়েই তাদের গুলি করে মারা হয়। জঙ্গিদের কাছে থাকা ন’টি গ্রেনেড, কালাশনিকভের গুলি ও অন্য বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।

অভিজাত এই এলাকায় এমনিতেই কড়া নিরাপত্তা থাকে। বড় রেস্তরাঁ, দূতাবাস, স্কুল সবই রয়েছে এখানে। পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির বাড়িও এই অঞ্চলেই। পুলিশপ্রধান আমির শেখের দাবি, বেশ কিছুটা দূরে নিজেদের গাড়ি রেখে স্থানীয় সময় সকাল ন’টা নাগাদ প্রথমে জঙ্গিরা কনসুলেটের বাইরে চেকপোস্টে হামলা চালায়। সেখানে একটি গ্রেনেড ফাটিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে।

এর পরে পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারান দুই অফিসার ও দু’জন নাগরিক। জঙ্গিরা তাদের মেরে এগোচ্ছিল কনসুলেটের গেটের দিকে। কনসুলেটে কাজে আসা সব সাধারণ নাগরিককে পুলিশ দ্রুত সরিয়ে দেয়। কনসুলেটের কর্মীরা সবাই নিরাপদেই আছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE