Advertisement
E-Paper

‘ইউনূস আমাকে কী ফাঁসি দিবে? আমি অরে ফাঁসি দিব!’ সোমবার রাতেই ফোন করে বলে দিয়েছেন হাসিনা, অনুগামীদের দাবি তেমনই

হাসিনার কথায় দৃশ‍্যতই উদ্বুব্ধ কলকাতাবাসী আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এতটাই যে, তাঁরা মনে করছেন, বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের জোটকেও ভোটে লড়তে না দেওয়ায় তাঁদের একটা ‘অলিখিত জোট’ হয়ে যাবে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৪৭
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।

তাঁর ফাঁসির আদেশ শুনে দমে যাওয়া তো দূরের কথা, শেখ হাসিনা বরং যুদ্ধের জন‍্য কোমর বাঁধছেন! তেমনই দাবি কলকাতায় থাকা তাঁর অনুগামীদের। তাঁদের মধ‍্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও আছেন।

সোমবার নেত্রীর ফাঁসির আদেশ শুনে তাঁরা খানিকটা মনমরা হয়ে পড়েছিলেন। যদিও তাঁদের দাবি, সকলেই আগে থেকে জানতেন, এমন বিচারই হতে চলেছে। দাবি আরও যে, এই বিচারের রায় আন্তর্জাতিক মহল ইতিমধ্যেই প্রত্যাখ্যান করেছে। সোমবার দুপুরে হাসিনার ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর তাঁরা কেউই নেত্রীকে ফোন করার ‘সাহস’ দেখাননি। নিজেদের মধ‍্যে ফোনাফুনি করে বিলাপ করছিলেন। মঙ্গলবার তাঁদের এক জন বলছিলেন, ‘‘আমরা বলাবলি করছিলাম, সব শেষ হয়ে গেল! আর আশা নেই।’’

তার মিনিট পাঁচেকের মধ‍্যেই সেই নেতার ফোনে ফোন করেন খোদ হাসিনা। সেই নেতার কথায়, ‘‘প্রথমে নেত্রী বলেন, আমার গলায় ফাঁসির রশি আর তোমরা আমাকে একটা ফোনও করলা না?’’ খানিক অপ্রস্তুত হয়ে ওই নেতা জবাব দেন, তিনি ভেবেছিলেন ফোন করবেন। কিন্তু সাহস পাননি। জবাবে হাসিনা তাঁকে সটান বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস তাঁকে কি ফাঁসি দেবেন? তিনি বরং ইউনূসকে ফাঁসি দেবেন! ওই নেতার কথায়, ‘‘নেত্রী বললেন, ইউনূস আমাকে কি ফাঁসি দিবে? আমি অরে ফাঁসি দিব! আল্লা আমারে এমনি এমনি বাঁচিয়ে রাখেননি। গ্রেনেড হামলাতেও আমার প্রাণ যায়নি!’’

হাসিনার কথায় দৃশ‍্যতই উদ্বুব্ধ কলকাতাবাসী আওয়ামী লীগের এই নেতৃবৃন্দ। এতটাই যে, তাঁরা মনে করছেন, বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের জোটকেও ভোটে লড়তে না দেওয়ায় তাঁদের একটা ‘অলিখিত জোট’ হয়ে যাবে। তাঁদেরই বক্তব্য, কাদের সিদ্দিকি ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তাঁর দল ভোটে অংশ নেবে না। বস্তুত, আওয়ামী লীগ মনে করছে, বাংলাদেশে তাদের বাদ দিয়ে ভোট হতে দিলে যে সরকার আসবে, তারা ‘বৈধতা’ পেয়ে যাবে। তখন আওয়ামী লীগের প্রত‍্যাবর্তন আরও কঠিন হয়ে যাবে। তবে হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণা হওয়ার আগে বাংলাদেশে যে ‘জনরোষ’ তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে ‘আশাবাদী’ কলকাতাবাসী আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব। তাঁরা অবশ‍্য জোরগলায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিকতম হিংসাত্মক ঘটনাপ্রবাহকে ‘গণরোষ’ বলেই অভিহিত করছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘আওয়ামী লীগের এখন অত ক্ষমতা নেই। আমাদের লোক কোথায় বাংলাদেশে?’’

বাংলাদেশে জুলাই অভ‍্যুত্থান এবং তৎপরবর্তী ঘটনার পর থেকেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের বড় অংশ কলকাতায় ‘আশ্রিত’। কবে দেশে ফিরবেন জানেন না। তাঁরা একান্ত আলোচনায় মেনেও নেন যে, তাঁদের কিছু ভুলও হয়েছিল। মাটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার অভ‍্যুত্থানের খোঁজও পাননি। কিন্তু একইসঙ্গে এখন তাঁরা বলছেন, ‘‘আমরা পিছনের দিকে তাকাতে চাই না। ‍যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আমরা সামনে তাকাতে চাই।’’

আওয়ামী লীগের এই নেতারা আশাবাদী, পরিস্থিতি বদলাবে। ইউনূসের বিরুদ্ধে জনরোষ শুরু হয়েছে। হাসিনার ফাঁসির আদেশের পরে সেই রোষ আরও বাড়বে বলে তাঁদের বক্তব‍্য। তার উপর স্বয়ং হাসিনা সোমবার রাতে ফোনে যা বলেছেন, তাতে তাঁরা আরও আশাবাদী। এক নেতার কথায়, ‘‘উনি বিশাল কথা বলেছেন! এ অনেক বড় কথা। আমরা ভেঙে পড়েছিলাম। উনিই আমাদের শক্তি দিলেন।’’

Bangladesh awami league Bangladesh Situation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy