Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্থগিত আবের ভারত সফর

সূত্রের বক্তব্য, ঘুরে-ফিরে সেই নাগরিকত্ব আইনের জেরেই গত কাল বাংলাদেশের দুই মন্ত্রী এবং আজ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সফর স্থগিত হয়ে গেল।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।—ছবি এএফপি।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।—ছবি এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৫
Share: Save:

পরপর দু’দিনে এক প্রধানমন্ত্রী-সহ তিন বিদেশি মন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল হয়ে গেল শেষ মুহূর্তে। কূটনীতির ইতিহাস বলছে, এমন ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে একেবারেই নজিরবিহীন।

সূত্রের বক্তব্য, ঘুরে-ফিরে সেই নাগরিকত্ব আইনের জেরেই গত কাল বাংলাদেশের দুই মন্ত্রী এবং আজ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সফর স্থগিত হয়ে গেল। গত কাল বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে না-জানা গেলেও গভীর রাতেই খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, আবের বহু-বিজ্ঞাপিত গুয়াহাটি সফরটি আপাতত বানচাল হতে চলেছে। সংসদে নাগরিকত্ব বিলটি পাশ হওয়া নিয়ে গুয়াহাটিতে যা পরিস্থিতি, তাতে স্বাভাবিক জনজীবনই বিকল।

সেখানে বিদেশের ভিভিআইপি অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। গত কয়েক দিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা চলছিল। আজ দুপুরে সরকারি ভাবে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে খুব সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের প্রস্তাবিত ভারত সফরটি সম্পর্কে দুই দেশ যৌথ ভাবে সিদ্ধান্তে এসেছে যে, দু’টি দেশেরই সুবিধাজনক সময় তৈরি হওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত রাখা হল।’

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সফরটির থিমই ছিল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। সেই অনুযায়ী স্থির হয়েছিল, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে গুয়াহাটিতে। সেখান থেকে আবেকে ইম্ফলে নিয়ে গিয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতি-বিজড়িত শান্তি মিউজিয়াম পরিদর্শন করানো হবে। জাপানের অর্থে চলা ১২টি প্রকল্পের কাজ এবং খুঁটিনাটি আবেকে দেখাবেন মোদী। আরও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিও ছিল। বিশেষত নেতাজি এবং জাপানের অতীত সংযোগের তাসটিকে নতুন করে খেলার কৌশল নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু গুয়াহাটির অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কারণে পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে গেল মোদী সরকারের। চেষ্টা হয়েছিল, শেষ মুহূর্তে বৈঠকস্থল গুয়াহাটি থেকে ভুবনেশ্বরে অথবা নিদেনপক্ষে দিল্লিতেই সরিয়ে আনার। কিন্তু এই বিষয়ে দু’টি সমস্যা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রথমত, এত উচ্চ পর্যায়ের সফর শেষ মুহূর্তে অন্য শহরে সরানো কার্যত অসম্ভব। পরিকাঠামো, নিরাপত্তা, সফরকারী রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের গোটা এলাকা পরিদর্শন— সব মিলিয়ে যথেষ্ট সময় লাগে প্রস্তুতিতে। দ্বিতীয়ত, জাপানের পক্ষ থেকেও অন্য কোথাও আয়োজনের প্রশ্নে আপত্তি জানানো হয়েছে। কারণ নয়াদিল্লির মতো তাদেরও পূর্ব-প্রস্তুতি ছিল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে কেন্দ্রে রেখে সফরটি সাজানোর। এই এলাকায় চিনের অতি-সক্রিয়তার মোকাবিলা করাটাও জাপানের কৌশলের মধ্যে পড়ে। সব মিলিয়ে সফর তাই আপাতত শিকেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE