Advertisement
E-Paper

হিলারিই প্রিয়, বলছে মানুষের ভোট

নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই দেশের ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থাকে এক হাত নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ইলেক্টোরাল কলেজ আসলে গণতন্ত্রের জন্য বিপর্যয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৭
হিলারি-অনুরাগী। মিসিসিপিতে বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

হিলারি-অনুরাগী। মিসিসিপিতে বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই দেশের ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থাকে এক হাত নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ইলেক্টোরাল কলেজ আসলে গণতন্ত্রের জন্য বিপর্যয়।’’ কিন্তু পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ওই ইলেক্টোরাল কলেজই হোয়াইট হাউসে পৌঁছে দিল তাঁকে।

কারণ পপুলার ভোটে ট্রাম্পকে পিছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন পরাজিত ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সব ক’টি রাজ্যের পপুলার বা গণভোট গণনা শেষ হয়নি। কিন্তু যে সব রাজ্যের ফল ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে, সেই বারো কোটি ভোট গণনা করে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের থেকে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন হিলারি। সংবাদ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শতাংশের হিসেবে ক্লিন্টনের ঝুলিতে রয়েছে ৪৭.৭ শতাংশ ভোট। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৬.৫ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ হিলারি ট্রাম্পের থেকে ১.২ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছেন।

কিন্তু তাঁর ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে ৭৪টি ইলেক্টোরাল ভোট বেশি পেয়ে হোয়াইট হাউসের দৌড়ে জয়ী হয়েছেন নিউ ইয়র্কের ধনকুবের। ট্রাম্প পেয়েছেন ৩০৬টি ভোট, হিলারির মাত্র ২৩২। গণভোট আর ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে এই ফারাক কেন?

আসলে আমেরিকায় ভোটদাতারা সরাসরি প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারেন না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে। সারা দেশে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টর রয়েছেন। যাঁরা সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, মূলত তাঁদের নিয়েই গঠিত হয় ইলেক্টোরাল। জিততে হলে এক প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৭০ জন ইলেক্টোরাল ভোট পেতে হয়। এ বার যেমন ট্রাম্প পেয়েছেন ৩০৬টি ভোট। দেশের নাগরিেকর ভোটই হচ্ছে পপুলার ভোট। কিন্তু একটি রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট যে দলের দিকে যায়, সেই দলটি সেই রাজ্যের সব ইলেক্টোরাল জিতে নেয়। তারপর বিভিন্ন রাজ্যে ইলেক্টোরালের সংখ্যা প্রার্থীর হার-জিত ঠিক করে দেয়।

যেমন, একটা রাজ্যে ১০০টি গণভোট এবং ইলেক্টরের সংখ্যা ১০। কোনও প্রার্থী যদি ১০০টির মধ্যে ৪৯টি ভোট পান, তা হলে তিনি একটিও ইলেক্টোরাল ভোট পাবেন না। জটিলতা আরও বাড়িয়েছে এক একটি রাজ্যের এক এক রকম ইলেক্টোরাল সংখ্যা। গণভোটের সংখ্যা আর ইলেক্টোরালের সংখ্যার মধ্যে কোনও সাযুজ্য না থাকায় মাঝেমধ্যেই ‘অঘটন’ ঘটে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পপুলার ভোটে দশ লক্ষেরও বেশি মার্জিনে জিততে চলেছেন হিলারি। ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর এ হেন সাফল্য কালই জনসাধারণের কাছে তুলে ধরেছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী টিম কেইন। নিউ ইয়র্কের হোটেলের গ্র্যান্ড বল রুমে কাল হিলারির বক্তৃতার আগেই ছিল টিমের বক্তৃতা। তখনই হিলারিকে শুভেচ্ছা জানান টিম। প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

তবে হিলারিই প্রথম নন। পপুলার ভোটে জিতেও ইলেক্টোরাল ভোটে হেরে যাওয়ার উদাহরণ রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে। ২০০০ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আল গোর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জর্জ ডব্লিউ বুশের থেকে ৫৩ লক্ষ বেশি পপুলার ভোট পেয়েছিলেন। অথচ বুশ গোরের চেয়ে পাঁচটি ইলেক্টোরাল ভোট বেশি পেয়ে প্রেসিডেন্টের গদিতে বসেন।

এই ফলাফলের পরে ইলেক্টোরাল ব্যবস্থার প্রযোজনীয়তা নিয়ে সওয়াল করেছিলেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পপুলার ভোটে যে হেতু সাধারণ মানুষ সরাসরি ভোট দেন, তাই ওই ব্যবস্থাকেই রেখে দেওয়া হোক। কিন্তু শতাব্দীপ্রাচীন এই সাংবিধানিক পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রচুর জটিলতা রয়েছে। হিলারি এত বেশি পপুলার ভোট পাওয়ায় ফের সেই প্রশ্নটাই মাথাচা়ড়া দিয়ে উঠেছে। দেশের আমজনতা যাঁকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে চাইছেন, সেই সংখ্যাটা উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্ত শুধুই ইলেক্টরদের উপরে রেখে দেওয়া যায় কি? জবাব শুধুই সময়ের হাতে।

common people Wants Hillary USA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy