Advertisement
E-Paper

কানাডা নিয়ে জট কাটাতে চায় দিল্লি

ট্রুডো এবং মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ন’দিন পরে যে যৌথ বিবৃতি পেশ করা হয়, তাতে বলা হয়েছিল, আইএস, লস্কর-ই-তইবা, আল কায়দার পাশাপাশি খলিস্তানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধেও একজোট হয়ে লড়বে দু’দেশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৯

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাম্প্রতিক ভারত সফরে বিতর্ক এবং কূটনৈতিক শৈত্য —দুইই প্রকট হয়ে জট তৈরি করেছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। সেই জট কাটা দূরস্থান —আরও গভীর গাড্ডার দিকে ঠেলে দিচ্ছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দু’দেশের যৌথ অঙ্গীকারকে।

ট্রুডো এবং মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ন’দিন পরে যে যৌথ বিবৃতি পেশ করা হয়, তাতে বলা হয়েছিল, আইএস, লস্কর-ই-তইবা, আল কায়দার পাশাপাশি খলিস্তানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধেও একজোট হয়ে লড়বে দু’দেশ। কিন্তু ট্রুডো দেশে ফেরার পরে বিষয়টি নিয়ে কানাডায় জলঘোলা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কার্যত এই বিবৃতির বাস্তবায়ন নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে কানাডার রাজনৈতিক শিবির প্রশ্ন তুলছে, সে দেশের একজন শিখও কোনও রকম উগ্রপন্থাকে সমর্থন করেন না। এ বিষয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণও নেই। তাদের অভিযোগ, অথচ ভারতের অভিযোগ সে দিকেই। ট্রুডোর উচিত এই ধরনের পদক্ষেপকে অগ্রাহ্য করা। কানাডার কট্টরপন্থী শিখ সংগঠনের আইনি পরামর্শদাতা গুরপতবন্ত পান্নুম বলেছেন, ‘‘ভারত সরকার কানাডার শিখ সম্প্রদায়কে বদনাম করতে চাইছে। খলিস্তানের কোনও সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের সঙ্গে কানাডা যুক্ত নয়। ভারত নিজের সুবিধামাফিক দ্বিপাক্ষিক শর্ত তৈরি করতে পারে না।’’ সে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বও একই সুরে কথা বলছেন।

এই অবস্থায় কানাডার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যসঙ্গীকে পাশে রাখাটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের কাছে। শুধু বাণিজ্যসঙ্গী নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদার ভারতের বড় সমর্থক কানাডা। সম্পর্ক ঝালাই করতে বিশেষ উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রককে। সূত্রের খবর, কানাডার প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিষ্ণুপ্রকাশকে ট্র্যাক টু কূটনীতি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষনীয় ভাবে কানাডা নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছেন বিষ্ণু। বলেছেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে মেঘ ঘনিয়েছে।’’

কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের বক্তব্য, কানাডার সঙ্গে সম্পর্ক ঘোলা হওয়ার জন্য দায়ী ভারতের ভুল পদক্ষেপ। কানাডার প্রতিনিধিদলে খলিস্তান জঙ্গি জশপাল অটওয়ালের উপস্থিতি ও দিল্লিতে কানাডা দূতাবাসের নৈশাহারে তাকে আমন্ত্রণের বিষয়টি নিয়েই ট্রুডোর সফরে সবচেয়ে বেশি জলঘোলা হয়েছে। অথচ এটা ঘটনা যে, এই অটওয়ালকে ভিসা দিয়েছিল ভারতই। আজ সেই ক্ষত মেরামতি করতে ভারত যে যুক্তি দিয়েছে, তা আরও বড় প্রশ্ন তুলেছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমারের বক্তব্য, ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে সংযোগ ঘটানো দেশের সচেতন নীতির মধ্যে পড়ে। অতীতে যাঁরা ভারত বিরোধী ভূমিকায় ছিলেন এবং পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন, তাঁদেরও কাছে টানতে চায় ভারত। তাই অটওয়ালকে ভিসা দেওয়া হয়েছিল। অন্য দিকে খোদ অটওয়াল এ দিনই জানান, তাঁর সফর ঘিরে ভারত এবং কানাডাকে যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে তার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।

Justin Trudeau Narendra Modi India Canada Khalistan movement জাস্টিন ট্রুডো Jaspal Atwal জশপাল অটওয়ালে
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy