Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

চিনের সংযুক্তির ডাক ফের উড়িয়ে দিল তাইওয়ান

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট যার জবাবে বলেন, ‘‘আঞ্চলিক রাজনীতির সঙ্গে চিন সম্পর্কে সাধারণ জনমতকে গুলিয়ে ফেলার জায়গা নেই। এখানকার মানুষ সার্বভৌমত্ব খোয়াতে রাজি, এমনটা ভাবার কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বেজিংই বরং তাইওয়ানের আঞ্চলিক রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছে।’’

উৎকর্ণ: সন্তানকে নিয়েই টিভিতে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের বক্তৃতা শুনছেন এক মা। তাইওয়ানের তাইপেই শহরে বুধবার। এএফপি

উৎকর্ণ: সন্তানকে নিয়েই টিভিতে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের বক্তৃতা শুনছেন এক মা। তাইওয়ানের তাইপেই শহরে বুধবার। এএফপি

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১২
Share: Save:

স্বাধীনতার কথা ভুলে যান, শান্তিপূর্ণ ভাবে আমাদের দেশের সঙ্গে জুড়ে যান! তাইওয়ানকে ফের এই বার্তাই দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ১৯৭৯ সালে সংযুক্তির যে প্রস্তাব চিন তাইওয়ানকে পাঠিয়েছিল, তার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ বক্তৃতা দেন চিনফিং।

তাতে প্রেসিডেন্ট শান্তির কথা বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন, প্রয়োজন পড়লে কিন্তু সামরিক বাহিনীকেও নামানো হতে পারে। স্বশাসিত তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন অঞ্চল বলেই মনে করে। যদিও তারা চিনের মূল ভূখণ্ড থেকে কখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেনি। বেজিং বরং বরাবরই মনে করে, তাইওয়ান চিনের অংশ। চিনফিংয়ের আজকের মন্তব্যও সেই পুরনো নীতি অনুসরণ করেই।

চিনফিংয়ের বক্তৃতার প্রেক্ষিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন জানিয়েছেন, সংযুক্তির কোনও প্রশ্নই নেই। বেজিংয়ের শর্ত মেনে তাইওয়ান কোনও দিনই চিনের সঙ্গে জুড়বে না। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ‘‘আমি আবারও জানাচ্ছি, তাইওয়ান ‘এক দেশ, দুই সরকার’ নীতি কখনওই মানবে না। এখানকার প্রত্যেকটি মানুষ সেটাই বিশ্বাস করে।’’ ‘এক দেশ দুই সরকার’ নীতিতে স্বশাসনের ক্ষমতা তাইওয়ানের হাতেই দেওয়ার কথা, যেমনটা হংকংয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে।

তবে শি-এর বুধবারের বক্তৃতা অতীতের তুলনায় কিছুটা আলাদা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ বার দুই দেশের ‘পুনর্মিলন’ নিয়ে বেশি সরব তিনি। তাইওয়ান একই চিনা পরিবারের অংশ বলে তাঁর দাবি। শি বলেছেন, ‘‘সংযুক্তির পথে হাঁটাই ইতিহাস। তাইওয়ানের স্বাধীনতা আসলে ইতিহাসের উল্টো স্রোত এবং তার পরে আর কোনও পথ খোলা নেই।’’ চিনা প্রেসিডেন্টের মতে, ‘‘তাইওয়ানের মানুষকে বুঝতে হবে স্বাধীনতা শুধু তাদের দুর্ভোগ বাড়াবে। তাইওয়ানের স্বাধীনতা প্রচার সংক্রান্ত কোনও ধরনের সক্রিয়তা বেজিং সহ্যও করবে না। সংযুক্তির মাধ্যমে চিনের মানুষও উজ্জীবিত হবেন।’’ পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে চিনফিংয়ের বার্তা: তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি চিনের ‘ঘরোয়া রাজনীতির’ বিষয়। এ ক্ষেত্রে বিদেশি কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না।

চিনফিংয়ের বক্তব্য প্রকাশের আগেই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নতুন বছরের শুরুতে বলেছিলেন, ‘‘তাইওয়ানে চিন সম্পর্কে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া কাজ করে, তা বুঝতে অনুরোধ করছি ওদের। আমাদের ২ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র নিয়ে যা ভাবে, সেটার প্রতি সম্মান দেখান। দু’পক্ষের মধ্যে যে ভিন্নতা, তাকেও শান্তিপূর্ণ চোখে দেখতে শিখুন।’’

নভেম্বরে সাইয়ের দল অবশ্য আঞ্চলিক নির্বাচনে ভরাডুবির মুখে পড়ে। বেজিংয়ের দাবি, প্রেসিডেন্টের বিচ্ছিন্নতাবাদী অবস্থানের জন্যই এমনটা ঘটেছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট যার জবাবে বলেন, ‘‘আঞ্চলিক রাজনীতির সঙ্গে চিন সম্পর্কে সাধারণ জনমতকে গুলিয়ে ফেলার জায়গা নেই। এখানকার মানুষ সার্বভৌমত্ব খোয়াতে রাজি, এমনটা ভাবার কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বেজিংই বরং তাইওয়ানের আঞ্চলিক রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China Taiwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE