Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আমেরিকার সঙ্গে বৈঠকে তালিবান প্রতিষ্ঠাতা বরাদর!

জানুয়ারির বৈঠকের পরেই ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল, দীর্ঘ ১৭ বছরের দ্বন্দ্ব এ বার কাটতে চলেছে। খলিলজ়াদ আলাদা করে বিবৃতি দিয়েছিলেন— ‘‘তালিবানের সঙ্গে এতখানি ইতিবাচক বৈঠক এর আগে কখনও হয়নি।’’

মোল্লা আব্দুল গনি বরাদর

মোল্লা আব্দুল গনি বরাদর

সংবাদ সংস্থা
দোহা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০২
Share: Save:

আফগানিস্তান থেকে অন্তত অর্ধেক সেনা সরানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তালিবানকে একাধিক বার শান্তি আলোচনায় ডাক দিয়ে পাকিস্তানকেও মধ্যস্থতার আর্জি জানিয়েছে ওয়াশিংটন। সেই প্রেক্ষিতে গত মাসে কাতারে জঙ্গিদের সঙ্গে আমেরিকার এক টেবিলে বসা নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছিল গোটা বিশ্বে। এ বার দোহায় দেখা গেল তালিবানের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল গনি বরাদরকে! পাক জেলে টানা ৮ বছরের বন্দিদশা কাটিয়ে গত বছর ছাড়া পেয়েছেন এই দুঁদে জঙ্গি নেতা। তার পর এত দিন ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ ছিলেন। এখন শোনা যাচ্ছে, আফগান বিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জ়ালমে খলিলজ়াদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন।

জানুয়ারির বৈঠকের পরেই ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল, দীর্ঘ ১৭ বছরের দ্বন্দ্ব এ বার কাটতে চলেছে। খলিলজ়াদ আলাদা করে বিবৃতি দিয়েছিলেন— ‘‘তালিবানের সঙ্গে এতখানি ইতিবাচক বৈঠক এর আগে কখনও হয়নি।’’ ওয়াশিংটন দাবি করেছিল, জঙ্গিদের সঙ্গে শান্তিচুক্তির একটা খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছে। যদিও হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানিয়েছিল, এখনও কয়েকটি বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে। তাই বরাদর বৈঠকে থাকবেন জেনেই, ফের আলোচনায় সরগরম ওয়াশিংটন। যার আঁচ পড়েছে কাবুলেও। কারণ, ২০১০-এ মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর যৌথ অভিযানে পাকড়াও হওয়ার আগে পর্যন্ত তালিবান দলে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন বরাদর। জঙ্গিদেরই একটি সূত্র বলছে, আমেরিকার সঙ্গে দর কষাকষিতেও নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিতে পারেন তিনি। দোহায় তালিবানের একটি রাজনৈতিক কার্যালয় রয়েছে। পাকিস্তান থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে বরাদর তাঁর সতীর্থদের উদ্দেশে যে অডিয়ো-বার্তা দেন, অনুমান সেটি দোহার কার্যালয়েই রেকর্ড করা হয়। তবে তিনি সরাসরি বৈঠকে থাকবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে আফগান প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে নারাজ তালিবান। কারণ তাদের মতে, কাবুল সরকার ওয়াশিংটনের হাতের পুতুল ছাড়া কিছু নয়। জঙ্গিরা জানায়, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দিনক্ষণ কাবুলকেই ঘোষণা করতে হবে। যত দিন না সেটা হচ্ছে, শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা নয়। ঠিক সেই কারণেই এ বার দোহায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হচ্ছে না। গত মাসের মার্কিন-তালিবান বৈঠকের পরে জানা গিয়েছে— আমেরিকা সেনা সরাতে রাজি। শর্ত একটাই— আল কায়দা বা আইএসের মতো জঙ্গিরা যাতে কোনও ভাবেই আফগানিস্তানকে ঘাঁটি করে আমেরিকার উপর হামলা না চালায়।

দেশে নিজের জমি শক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিজ কারজ়াই-ও। গত মাসে দেশে শান্তি ফেরানো নিয়ে তিনি মস্কোতে একটি বৈঠক ডাকেন। বিরোধী দলের অনেকেই সেখানে ছিলেন, কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকারের তরফে কেউ ছিলেন না। এখন দোহায় কী হয়, সে দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজে চিঠি লিখে মধ্যস্থতার কথা বলেন। জবাবে ইমরান জানান, ক্ষমতার মধ্যে থেকে তাঁর প্রশাসন যথাসাধ্য করবে। এখনও পর্যন্ত অবশ্য তার ছিটেফোঁটাও নজরে আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abdul Ghani Baradar Taliban Afghanistan USA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE