আদালত চত্বরে পড়ে রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত এক জঙ্গির দেহ। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।
ব্যস্ত আদালত চত্বর। হঠাৎই সেনার পোশাকে জনা পাঁচেক সশস্ত্র জঙ্গি ঢুকে পড়ল ভিতরে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারদিক। পরিস্থিতি আন্দাজ করে পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনীও। দু’পক্ষের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় অন্তত দশ জনের। আহত প্রায় একশো।
আফগান নিরাপত্তাবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ফের তাণ্ডব চালালো তালিবান জঙ্গিরা। আজ তাদের আক্রমণের নিশানায় ছিল বালখ প্রদেশে মাজার-ই-শরিফ শহরের একটি আদালত। বালখের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মাজার-ই-শরিফের ঠিক কেন্দ্রে এই আদালতটি। প্রাদেশিক গভর্নর আত্তা মহমম্দ নুরের অফিসের পাশাপাশি একাধিক সরকারি অফিস রয়েছে এই চত্বরে। পুলিশ জানিয়েছে, রক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে আদালতের ভিতর ঢুকে পরে পাঁচ জঙ্গি। পুলিশের পোশাক গায়ে থাকায় সহজেই ঢুকতে পারে তারা। জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডে আগুন ধরে যায় কোর্ট চত্বরের ভিতর একটি অফিসে। শেষে সন্ধ্যা নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। টানা সাত ঘণ্টা আফগান জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের শেষে মৃত্যু হয় পাঁচ জঙ্গিরই। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন জেলা পুলিশ প্রধান-সহ পাঁচ জন নিরাপত্তা আধিকারিকও। আহত প্রায় ২৬ জন সরকারি অফিসার।
হামলার দায় স্বীকার করে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে তালিবান মুখপাত্র জাবিনউল্লা মুজাহিদিন। তিনি বলেন, ‘‘মাজার-ই-শরিফের আদালতে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে মুজাহিদিনরা। শত্রুপক্ষের অনেকে খতম হয়েছে।’’
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে, ‘‘আদালতের পাঁচশ মিটার দূর থেকেও শোনা যাচ্ছিল গুলির আওয়াজ। ঘটনাস্থলের আশেপাশে বহু রাস্তা এখনও বন্ধ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত স্কুল।’’ সংঘর্ষ চলাকালীন আদালতের ভিতর থেকে নিরাপদে বার করে আনা হয় সব আইনজীবীদের। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার সময় নিজের বাড়িতে ছিলেন গভর্নর আত্তা মহম্মদ নুর। পরে ঘটনাস্থল থেকে মাত্র দু’শ মিটার দূরে তাঁর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিলেন তিনি।
এর আগেও আফগানিস্তানের বিচারব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে একাধিক হামলা চালিয়েছে তালিবান। ২০১৩ সালে আফগান সুপ্রিম কোর্টের সামনে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১৭ জনকে হত্যা করে তালিবান। ২০১৪ সালে আফগান সুপ্রিম কোর্টের সচিবালয়ের প্রধান আতিকুল্লা রফিকে খুন করে জঙ্গিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy