Advertisement
E-Paper

আতঙ্কের গাজায় বিয়ের রোশনাই

অনেক সাধ করে বিয়ের জন্য সাদা পোশাকটি কিনেছিলেন বছর তেইশের হেবা ফায়াদ। কিন্তু ইজরায়েলি হামলায় এক নিমেষে সব স্বপ্নই ভাঙতে বসেছিল প্যালেস্তাইনি ওই তরুণীর। তবু ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও প্রেমিক ওমরের সঙ্গে নতুন এক ঘর বাঁধলেন হেবা। সৌজন্যে রাষ্ট্রপুঞ্জ! যুদ্ধে সব কিছু হারালেও চার হাত এক হয়ে গেল পশ্চিম গাজার ত্রাণশিবিরে। নিমেষেই ওই ত্রাণশিবির হয়ে উঠল উৎসবমুখর। যুদ্ধক্লান্ত গাজায় যেন এক টুকরো খুশির ছোঁয়া।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৩
নতুন কনে হেবা। গাজার একটি ত্রাণশিবিরে। ছবি: রয়টার্স

নতুন কনে হেবা। গাজার একটি ত্রাণশিবিরে। ছবি: রয়টার্স

অনেক সাধ করে বিয়ের জন্য সাদা পোশাকটি কিনেছিলেন বছর তেইশের হেবা ফায়াদ। কিন্তু ইজরায়েলি হামলায় এক নিমেষে সব স্বপ্নই ভাঙতে বসেছিল প্যালেস্তাইনি ওই তরুণীর। তবু ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও প্রেমিক ওমরের সঙ্গে নতুন এক ঘর বাঁধলেন হেবা। সৌজন্যে রাষ্ট্রপুঞ্জ!

যুদ্ধে সব কিছু হারালেও চার হাত এক হয়ে গেল পশ্চিম গাজার ত্রাণশিবিরে। নিমেষেই ওই ত্রাণশিবির হয়ে উঠল উৎসবমুখর। যুদ্ধক্লান্ত গাজায় যেন এক টুকরো খুশির ছোঁয়া।

সেপ্টেম্বরে হেবার বাড়িতেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাঁদের। বিয়ের আনন্দে মশগুল হেবা সব প্রস্তুতিই সেরে ফেলেছিলেন। বিয়ের পোশাক থেকে শুরু করে অতিথিদের তালিকাও তৈরি করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাদ সাধল ইজরায়েলি হামলা। ওই হামলায় সব খোয়ালেন হেবা। বাড়ির সঙ্গে সঙ্গেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল বিয়ের সমস্ত প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছিল নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন। আশ্রয় জুটেছিল পশ্চিম গাজার আল-শাতিয়া ত্রাণশিবিরে। অন্য দেশের বাসিন্দা হলেও প্রেমিকার সঙ্গেই ত্রাণশিবিরে উঠেছিলেন ওমর। সঙ্গে আরও প্রায় ৪০০০ উদ্বাস্তু। এটাই প্রথম নয়। হেবার জীবনে এর আগেও এসেছে বহু ঝড়ঝাপটা। সেই ২০০৬ থেকেই ইজরায়েলি হামলার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে হেবার পরিবার। ওই হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পা হারিয়েছেন হেবার মা নাবিলা। ওই সময়ই অপর একটি ইজরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে হেবার ভাই। কিন্তু এ বারের ইজরায়েলি হামলা হেবার ঘরবাড়ি কেড়ে নিলেও তাঁকে স্বপ্ন দেখাতে শেখাল।

সম্প্রতি শুরু হয়েছে হেবার জীবনের রূপকথার। আল-শাতিয়া ত্রাণ শিবিরে ছিল উৎসবের আমেজ। রংবেরঙের বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল। সঙ্গে ছিল নাচ-গানের আয়োজন। স্থানীয় সময় সন্ধে ৭টায় বিয়ে হয়ে গেল ওমর ও হেবার। বিয়ের সমস্ত খরচ বহন করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্মীরা নবদম্পতির নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসের ব্যবস্থা করেছিলেন। প্যালেস্তাইনি উদ্বাস্তুরাও এই বিয়েতে মেতে উঠেছিলেন। যথাসাধ্য সাহায্যও করেছেন তাঁরা। বিয়ের পর নবদম্পতিকে দু’রাতের জন্য একটি হোটেলে পাঠানো হয়েছে।

যুদ্ধের সমস্ত বাধা পেরিয়ে বিয়ের পর সলজ্জ নববধূ বললেন, ‘‘এখন আমাদের বিয়ে না হলে আগামী তিন বছরেও তা সম্ভব হত না।” পাশাপাশি খুশি ওমরও। তাঁর কথায়, “হেবাকে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।” বিয়ের খবর পেয়ে আপ্লুত হেবার মা-ও।

ধ্বংসের মধ্যেও নতুন সৃষ্টির এক বার্তা বহন করবে ওমর-হেবার বিয়ে বলে আশাবাদী রাষ্ট্রপুঞ্জ। বিয়ের পর তাঁরা চলে যাবেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে দূরে গিয়ে ওমরের পরিবারের সঙ্গেই নতুন জীবন শুরু করতে চান হেবা।

gaza israel israeli air strike marriage ceremony marriage ceremony on gaza heba
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy