Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিরোধী হটাতে পার্লামেন্টে তালা

মলদ্বীপের প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের এই কাজ ‘অসাংবিধানিক এবং বেআইনি।’ সরকারের তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। সরকারি মুখপাত্রকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

অশান্ত: পার্লামেন্ট ভবনে সেনার দল। সোমবার মালে-তে।

অশান্ত: পার্লামেন্ট ভবনে সেনার দল। সোমবার মালে-তে।

সংবাদ সংস্থা
মালে (মলদ্বীপ) শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:২১
Share: Save:

অশান্তির আবহে টালমাটাল মধুচন্দ্রিমার দ্বীপ! রাজনৈতিক তরজার জেরে তালা পড়ল মলদ্বীপে পার্লামেন্টের গেটে। সেনা অফিসাররা ঘিরে রইলেন পার্লামেন্টের প্রবেশপথ। সদস্যরা ঢুকতে চাইলেও তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হল মূল ফটক থেকে।

পরে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন আব্দুল গায়ুমের নির্দেশেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পার্লামেন্ট। বিরোধীদের দাবি, স্পিকার আবদুল্লা মাসিহ মহম্মদকে ইমপিচমেন্ট থেকে বাঁচাতেই প্রেসিডেন্ট এই ‘মরিয়া’ পথ বেছে নিয়েছেন। তবুও সেনার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বেশ কয়েক জন বিরোধী এমপি জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের পেপার স্প্রে দিয়ে দ্রুত হটিয়ে দেয় সেনাবাহিনী।

মলদ্বীপের প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের এই কাজ ‘অসাংবিধানিক এবং বেআইনি।’ সরকারের তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। সরকারি মুখপাত্রকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

কিন্তু কী কারণে এই পথে হাঁটতে হল প্রেসিডেন্টকে?

পার্লামেন্টে আজ সকালে স্পিকার আবদুল্লার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ছিল। ৮৫ সদস্যের হাউসে এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন ৪৫ জন। কিন্তু গত সপ্তাহে হঠাৎ দেশের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, অনাস্থায় সায় রয়েছে এমন চার পার্লামেন্ট সদস্য নিজেদের সংশ্লিষ্ট আসন হারিয়েছেন। কারণ তারা শাসক দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। এই নিয়ে জটিলতার সূত্রপাত। গত মাসেও কয়েক জন এমপি-কে গ্রেফতার করা হয়।

আগামী বছর মলদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগেই পার্লামেন্টে ইয়ামিনকে কোণঠাসা করতে চান বিরোধীরা। কূটনীতিকদের মতে, স্পিকারকে নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রেসিডেন্ট বুঝে গিয়েছিলেন, তাঁর জন্য বড় ধাক্কা অপেক্ষা করছে। গত মার্চ মাসেই স্পিকারকে ইমপিচ করার চেষ্টা হয়েছিল। সে বারও পার্লামেন্টে সেনা ঢুকিয়ে বিরোধীদের বের করে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট।

মলদ্বীপে ২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জিতে আসা প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ এখন বিরোধী জোটের মুখ হয়ে উঠেছেন। নির্বাসিত এই নেতা আগামী বছর ইয়ামিনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চান। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্টের সৎ ভাই মামুন আব্দুল গায়ুম। গত মার্চ থেকে তাঁরা জোট বেঁধে বিরোধিতার পথে এগোচ্ছেন।

প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন এক বিচারককে গ্রেফতারির নির্দেশ দেওয়ায় ২০১৫ সালে তেরো বছরের জেল হয়েছিল নাশিদের। গত বছর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ব্রিটেনে গিয়ে আশ্রয় পান। তা ছাড়া, বিরোধীদের অনেক বড় নেতাই প্রেসিডেন্টের কোপে পড়ে জেলে। বা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আপাতত বিরোধী জোটের লক্ষ্য, বিচার-ব্যবস্থা, এবং নির্বাচন কমিশনের সংস্কার করা। তা ছাড়া, আরও কয়েকটি সরকারি সংস্থা যেখানে ইয়ামিনের অতিরিক্ত প্রভাব রয়েছে, সেগুলিও ঢেলে সাজা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE