ছবি রয়টার্স।
ওদের কথা বিদায়ী আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানেন। একটা সময়ে ট্রাম্প তো সব ফাঁস করেই দিচ্ছিলেন। নেহাত ওরা বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ঠান্ডা করল, তাই রক্ষে! সব ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে ওরা কিন্তু এখনও মঙ্গলের নীচে নিজেদের গোপন আড্ডায় ‘মহাবিশ্বের বুনন’ বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে! ‘ওরা’ কারা?
ইজ়রায়েলের মহাকাশ নিরাপত্তা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান বছর সাতাশির হাইম এশেদের দাবি— ওরা এলিয়েন, ভিন্ গ্রহের প্রাণী। উপরোক্ত চাঞ্চল্যকর দাবিটিও তাঁর। এশেদের লেখা ‘দ্য ইউনিভার্স বিয়ন্ড দ্য হরাইজ়ন’ নামের একটি বই শীঘ্রই বাজারে আসছে। তার আগেই অবশ্য বাজার গরম। সৌজন্যে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার। সম্প্রতি ইজ়রায়েলের প্রথম সারির একটি পত্রিকায় প্রকাশিত যে-সাক্ষাৎকারে তিনি ভিন্গ্রহীদের নিয়ে একগুচ্ছ বিস্ময়কর দাবি পেশ করে বলেছেন, ‘‘চুক্তি মেনেই ওদের কথা সবটা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। পৃথিবীর মানুষ তৈরি নয় বলে ওরা নিজেরাও সামনে আসতে চাইছে না।’’
আরও পড়ুন: বন্ধে বিক্ষিপ্ত গোলমাল, মানুষ পথে বেরোলেন কম
ভিন্গ্রহীদের সঙ্গে চুক্তি? কারা করল? কবে! এশেদের দাবি, দ্বিতীয় পক্ষ আমেরিকা। অনেক দিন ধরেই আমেরিকা ও ইজ়রায়েলের মহাকাশবিজ্ঞানীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে ভিন্গ্রহীদের ‘গ্যালাকটিক ফেডারেশন।’ কার্যত লোকচক্ষুর আড়ালেই মঙ্গলের আন্ডারগ্রাউন্ডে গবেষণা করছে তারা।
আরও পড়ুন: যাত্রী কম, ঝামেলার আশঙ্কায় হাতে গোনা বাস পথে
গত ২ ডিসেম্বর এই সাক্ষাৎকারটি প্রথম ছাপা হয়েছিল হিব্রুতে। পরে এর কিছু অংশ ইংরেজি তর্জমায় ‘জেরুসালেম পোস্ট’-এ বেরোতেই শুরু হয় হইচই। ওয়াশিংটন কিংবা জেরুসালেমের কোনও কর্মকর্তা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও মিমে-র ঢল নেমেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক নেটিজ়েন লিখলেন, ‘‘করোনার বছরে এমনিতেই আজব সব ব্যাপার-স্যাপার ঘটে চলেছে। দু’দিন আগে আমেরিকার মরুভূমি আর ইউরোপের পর্বতে শুনছিলাম এলিয়েনদের রেখে যাওয়া মনেলিথের কথা। এ বার সরাসরি এলিয়েনের খোঁজ! তা-ও কিনা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রেখে চলা ভিন্গ্রহী!’’
আর এক জনের কটাক্ষ— ‘‘তা-ও ভাল ভোটের প্রচারে এ সব নিয়ে মুখ খোলেননি ট্রাম্প! এখন তো সন্দেহ হচ্ছে, জো বাইডেনের ঝুলি ওরাই এসে ভরিয়ে গেল কিনা! সাধে কি আর ট্রাম্প পোস্টাল ব্যালটে সই-অডিটের দাবি তুলছেন!’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসি-ঠাট্টার রোল উঠলেও, ইজ়রায়েলের হয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় মহাকাশ নিরাপত্তা দেখভাল করা এশেদ কেন এমন দাবি করলেন, ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশকে। এশেদ নিজেই ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও এ সব কথা বললে আমায় হাসপাতালে পাঠানো হত। কিন্তু এখন তো ইউএফও (আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লায়িং অবজেক্ট), এলিয়েন নিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে গবেষণা-আলোচনা হচ্ছে। তাই বলেই ফেললাম। আমার আর ভয় কী! কিছু হারানোরও নেই। তা-ও সবটা বলতে পারলাম কই! স্পেস, স্পেসশিপ শুনলে আজও মানুষ নিজের খেয়ালে অনেক কিছু ভেবে নেয়। ভিন্ গ্রহের প্রাণীরা এই গণহিস্টিরিয়া চায় না। তারা চায়, মানুষ দুনিয়ার বাইরের এই দুনিয়া নিয়ে আরও গবেষণা করুক, নিজেদের আরও উন্নত করুক।’’
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে ইউএফও নিয়ে বেশ কিছু তদন্তের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নিক পোপ কিন্তু এশাদের তত্ত্ব কার্যত উড়িয়ে দিয়েই বলেন, ‘‘হয় উনি মজা করছেন। না হয়, সবটাই নিজেই বইয়ের বাজার ধরার কৌশল! অথবা এমনটাও হতে পারে, হিব্রু থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের সময় একটা বড় কিছু গন্ডগোল হয়েছে।’’ আর নাসার বক্তব্য? আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য মহাবিশ্বে প্রাণের অনুসন্ধান। তবে ভিন্গ্রহের প্রাণী এখনও তারা খুঁজে পায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy