বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সোমবার রায় ঘোষণা করবে সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। তার আগে কার্যত দুর্গে পরিণত করা হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে। ঢাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে তল্লাশির জন্য অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হয়েছে। একই রকম আঁটসাঁট নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে ট্রাইবুনাল চত্বরেও। সেখানকার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা র্যাবকে। যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গাড়ি এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় সোমবার কম যানবাহন চলছে ঢাকায়। রাস্তায় মানুষজনের উপস্থিতিও কম। গণপরিবহণ কম থাকায় অনেকেই রিকশা বা অটোয় গন্তব্যে পৌঁছোনোর চেষ্টা করছেন। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোহরাবর্দী উদ্যান এলাকায় পথচারীদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগে, রবিবার থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দফায় দফায় অশান্তির খবর আসছে। ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি, বাস, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে হাসিনার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকি, অ্যাম্বুল্যান্সেও ককটেল হামলার খবর মিলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রবিবার সন্ধ্যায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা পুলিশ। বলা হয়েছে, কোথাও কাউকে মানুষ, গাড়ি বা পুলিশের উপর অগ্নিসংযোগ বা ককটেল ছুড়তে দেখলেই গুলি করতে হবে।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সোমবার হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির রায় ঘোষণা করবে। তার সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছরের ৫ অগস্ট হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের চাপে পড়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ইস্তফা দেন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। জুলাই মাসে বাংলাদেশের ছাত্রযুবদের আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সংক্রান্ত মামলায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।