E-Paper

ঢাকার প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা করিডরে সাহায্য করবে তুরস্ক

সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেলেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সচিব হালুক গোরগুন। সূত্রের খবর, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য, বাংলাদেশ-তুরস্ক কৌশলগত সম্পর্ককে জোরদার এবং বৃহত্তর ইসলামিক প্রতিরক্ষা শিল্প-জোট গঠন তরাণ্বিত করা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৯
প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে তুরস্ক এত উদ্গ্রীব কেন?

প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে তুরস্ক এত উদ্গ্রীব কেন? —প্রতীকী চিত্র।

ঢাকার মসনদে বসার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে তৎপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার পাশাপাশি, চিন সফরও সেরে ফেলেছেন তিনি। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল তুরস্ক। সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেলেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সচিব হালুক গোরগুন। সূত্রের খবর, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য, বাংলাদেশ-তুরস্ক কৌশলগত সম্পর্ককে জোরদার এবং বৃহত্তর ইসলামিক প্রতিরক্ষা শিল্প-জোট গঠন তরাণ্বিত করা।

গত ৮ জুলাই ঢাকায় পৌঁছন গোরগুন। ইউনূস ছাড়াও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশে কারিগরি এবং কৌশলগত সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি সেনাবাহিনীর পদস্থ অফিসার এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) চেয়ারম্যানের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বলে খবর।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ইউনূস সরকার ঢাকা এবং চট্টগ্রামে প্রতিরক্ষা করিডর তৈরি করতে চায়। অর্থ এবং প্রযুক্তি দিয়ে তুরস্ক তাদের সাহায্য করবে বলে আশা অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের। ওই প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা করিডরে সমরাস্ত্রের কারখানা হবে এবং তাতে তুরস্কের সহায়তায় তৈরি হবে বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে তুরস্ক থেকে ট্যাঙ্ক কিনতে চায় বাংলাদেশ।

প্রশ্ন উঠছে, তুরস্ক দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নয়, এই অঞ্চলে তাদের স্থায়ী পরিকাঠামো নেই, তা হলে ঢাকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে আঙ্কারা এত উদ্গ্রীব কেন? কূটনৈতিক শিবিরের বড় অংশের মতে, বিষয়টি যতটা না ব্যবসা, তার চেয়ে বেশি আদর্শগত। পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তুরস্ক। মলদ্বীপে ইসলামপন্থী প্রচার করে ক্ষমতায় আসা মুইজ়্জ়ু সরকারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই তুরস্ক থেকে ড্রোন কিনেছে মলদ্বীপ। এ বার প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে পা রাখতে চাইছে রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ানের দেশ। তাদের কর্মকাণ্ড দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ইসলামিক রাষ্ট্র জোট গঠনের চেষ্টার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ভারতের সঙ্গে তুরস্কের সীমান্ত নেই, দু’দেশের মধ্যে দিয়ে কোনও নদী প্রবাহিত হয়নি। তা সত্ত্বেও তুরস্ক পাকিস্তানের যাবতীয় ভারত-বিরোধী কার্যকলাপকে সমর্থন করে। ইসলামাবাদকে সামরিক সাহায্য করে। কাশ্মীর নিয়েও মাঝে মধ্যেই অবাঞ্ছিত মন্তব্য করে থাকে এই দেশটি। আর তা করে আদর্শগত কারণে। ফলে বাংলাদেশে তুরস্ক প্রতিরক্ষা করিডরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলে মাথাব্যথা বাড়বে নরেন্দ্র মোদী সরকারের।

এই ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভারতকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে, এই উদ্ভট মানসিকতা থেকেই তুরস্কের সঙ্গে মিত্রতায় আবদ্ধ হতে চাইছে এই সরকার। ইউনূসের প্রধান শত্রু শেখ হাসিনা যে হেতু ভারতে রয়েছেন,তাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের শক্তিকে খাটো করতেই এই চেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dhaka Diplomacy

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy