প্রতীকী ছবি।
ঘরে যে টেলিভিশনটি রয়েছে, সেটি আমেরিকার গুপ্তচর হতে পারে! একান্ত ব্যক্তিগত এবং ঘনিষ্ঠ পরিসরে কোনও ব্যক্তি কী কথোপকথন চালাচ্ছেন, তার বিশদ তথ্য ওই টিভি সেটটি পৌঁছে দিতে পারে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র সদর দফতরে!
এই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছে উইকিলিকস। শুধু টিভি নয়, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট নির্ভর নানা গ্যাজেটস ও অ্যাপের মাধ্যমেও নজরদারি চালাচ্ছে সিআইএ। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাটির সার্ভার থেকে চূড়ান্ত গোপনীয় নথি হাতিয়ে এনে উইকিলিকস এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে।
ঠিক কী জানিয়েছে উইকিলিকস?
সিআইএ-র কিছু গোপন নথি উইকিলিকস প্রকাশ করেছে। তা থেকে জানা যাচ্ছে, হ্যাকিং করে গোপন তথ্য হাতানোর জন্য এবং নজরদারি চালানোর জন্য সিআইএ এখন স্মার্ট টিভি, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য গ্যাজেটসকে কাজে লাগাচ্ছে। ওই সব গ্যাজেটসে গুপ্তচরবৃত্তিতে পারদর্শী যন্ত্রাংশ লাগানো থাকছে। অথবা ওই সব গ্যাজেটসের সাইবার সিকিওরিটি ব্যবস্থায় কী কী ফাঁক রয়েছে, তা সিআইএ প্রভাব খাটিয়ে জেনে নিচ্ছে। তার পর সেই ফাঁকগুলিকে কাজে লাগিয়েই গোপন তথ্য হ্যাক করা হচ্ছে।
যে নথিগুলি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে, সেগুলি আদৌ সিআইএ-র কি না, তা নিয়ে সিআইএ-র তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইকিলিকসের প্রকাশ্যে আনা নথিগুলির মধ্যে অনেকগুলিই যে সিআইএ নথি, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কারণ সিআইএ যে ধরনের সাঙ্কেতিক ভাষা ব্যবহার করে, প্রকাশিত নথিতে সেই ভাষাই পাওয়া গিয়েছে।
উইকিলিকসের প্রকাশিত নথিকে নস্যাৎ করা যাচ্ছে না, কারণ এ ভাবে যে গুপ্তচরবৃত্তি সম্ভব, তা বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিলেন। —ফাইল চিত্র।
টিভি-র মাধ্যমে কী ভাবে গুপ্তচরবৃত্তি সম্ভব?
উইকিলিকসের দাবি, সিআইএ নথি থেকে ‘উইপিং এঞ্জেল’ নামে একটি প্রোগ্রামের হদিশ মিলেছে। মার্কিন ও ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থার এই যৌথ কর্মসূচির অধীনে স্যামসাং স্মার্ট টিভিতে কথোপকথন রেকর্ড করার যন্ত্র লাগানো হয়েছে। টিভি যখন বন্ধ থাকবে, তখন আশপাশের সব কথোপকথন এবং শব্দ ওই টিভি রেকর্ড করবে এবং সরাসরি সিআইএ-র কাছে পাঠিয়ে দেবে। উইকিলিকসের দাবি এমনই।
স্মার্ট টিভি এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক গ্যাজেটসের মাধ্যমে এ ভাবে গুপ্তচরবৃত্তি চালানো যে সম্ভব, তা কিন্তু বিশেষজ্ঞরা অনেক আগেই জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জঙ্গিমুক্ত হওয়ার পথে পশ্চিম মসুল
হোয়াটসঅ্যাপ কি নিরাপদ?
উইকিলিকস নথি বলছে, এই ধরনের প্রায় কোনও অ্যাপই নিরাপদ নয়। অ্যানড্রয়েড ডিভাইসে ইনস্টলড থাকা হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল থেকে কী ভাবে নথি হাতানো সম্ভব, তা বিশদে ব্যাখা করা হয়েছে সেখানে। কিন্তু ফোন ট্যাপ করে বা হ্যাক করে হোয়াটসঅ্যাপ আদানপ্রদান ডিকোড করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে উইকিলিকস নথিতে কিছু লেখা হয়নি।
আইফোন থেকেও কি নথি হাতাচ্ছে সিআইএ?
উইকিলিকসের নথি বলছে আইফোন মোটেই নিরাপদ নয়। অ্যাপলের এই ফোনে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত দুর্বলতাগুলি ঠিক কী কী, তা যে সিআইএ খুঁজে বার করে ফেলেছে, উইকিলিকসের প্রকাশিত নথি থেকে সে কথাও স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy