মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে দক্ষিণ চিন সাগরে ভেঙে পড়ল একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান এবং নৌবাহিনীর একটি চপার। এই সাগর নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ চলছে বেজিং-ওয়াশিংটনের। তার মধ্যেই এই ঘটনায় প্রত্যাশিত ভাবে রহস্য তৈরি হয়েছে।
মার্কিন যুদ্ধবিমান এবং নৌবাহিনীর চপার ভেঙে পড়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই চিন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মার্কিন নৌমহড়া চলার সময়েই ঘটনাটি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকাকে উদ্ধারকাজ-সহ যাবতীয় মানবিক সাহায্য করতে প্রস্তুত চিন। যদিও নৌমহড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি মার্কিন নৌসেনা। তারা শুধু জানিয়েছে, ‘রুটিন অপারেশন’ চলছিল।
দক্ষিণ চিন সাগরে মোতায়েন রয়েছেন মার্কিন রণতরী ‘নিমিৎজ়’ (আদতে ওই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ এবং তার সহযোগী কয়েকটি ডেস্ট্রয়ার এবং কর্ভেট শ্রেণির রণতরী)। আমেরিকার দাবি, ‘রুটিন অপারেশনের’ সময় রণতরীর ‘এমএইচ-৬০আর সিহক’ হেলিকপ্টারটি প্রথমে ভেঙে পড়ে। তখন স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট। ঠিক ৩০ মিনিট পর দুপুর ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ দক্ষিণ চিন সাগরে ভেঙে পড়ে একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান। সেটির নাম ‘এফ/এ-১৮এফ সুপার হর্নেট ফাইটার জেট’।
মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, হেলিকপ্টারে তিন জন ক্রু মেম্বার এবং যুদ্ধবিমানে দুই পাইলট ছিলেন। তাঁদের সকলকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে, কারণ দক্ষিণ চিন সাগর বরাবর সংবেদনশীল এলাকা বলেই পরিচিত। যদিও ঠিক কী কারণে চপার এবং যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমেরিকা জানিয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত করবে।
সত্তরের দশক থেকে এই সাগর বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য জলপথ। পাশাপাশি, এখানকার তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডারের কারণেও অঞ্চলটির গুরুত্ব বেড়েছে দিনে দিনে। দক্ষিণ চিন সাগরের অধিকাংশ এলাকাই নিজেদের অংশ বলে দাবি করে বেজিং। তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ফিলিপিন্স, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনাইয়ের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট শাসকগোষ্ঠীর বিরোধও রয়েছে। আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল চিনের দাবিকে অস্বীকার করলেও তা দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিঙের একাধিপত্যকে প্রশমিত করতে পারেনি। তা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চিনের ঠান্ডা লড়াইও চলছে দীর্ঘ দিন ধরে।