১০ মার্চের ব্লগে একটি পোস্ট। ‘‘প্রফেসর বলতেই যে ধরনের মানুষের কথা মনে আসে, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার (ইউসিএলএ) অধ্যাপক উইলিয়াম ক্লুগ একদমই সে রকম নন। তিনি এক জন বিকৃত মানসিকতার মানুষ। ইউসিএলএ পড়তে আসা সব নতুন পড়ুয়াদের আমি এর থেকে দূরে থাকতে বলছি।’’ সঙ্গে পোস্ট করা অধ্যাপক উইলিয়াম ক্লুগের একটি ছবি। ছবিটির নীচে রয়েছে এই পোস্ট-কর্তার নিজের পরিচয় ও এমন পোস্টের কারণ। তাতে বলা হচ্ছে, ওই অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি করতেন পোস্টকর্তা। অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, তিনি সুকৌশলে তাঁর কোড চুরি করে অন্য ছাত্রকে দিয়েছেন। আর এই ঘটনায় ছাত্র ও এই পোস্টের কর্তা এতটাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, যে অধ্যাপককে খুন করে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) ক্যাম্পাসে বন্দুকবাজের হানায় মৃত্যু হয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ও এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক উইলিয়াম এস ক্লুগের। আর তাঁকে খুন করেছেন তাঁরই ছাত্র। নাম মৈনাক সরকার।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, গত কাল স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ হামলার খবর আসে। হামলার খবর পেয়ে ক্যাম্পাসটি ‘লক ডাউন’ করে দেয় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে আসে এফবিআই-ও। ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের দফতর থেকে মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার হয়।
মৈনাকের লিঙ্কড ইন প্রোফাইল অনুযায়ী, ২০০০ সালে আইআইটি খড়গপুর থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক হন তিনি।
২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড থেকে অ্যারোনটিক্স ও অ্যাস্ট্রোনটিক্সে স্নাতকোত্তর করেন। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে গবেষণায় সহকারী হিসেবেও কাজ করতেন। এর পর ওহায়োর একটি রবার সংস্থায় ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ওই সংস্থায় কাজ করেছেন বলে সংস্থার প্রেসিডেন্ট একটি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছে।
মৈনাক ব্লগে অধ্যাপক ক্লুগের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তা মিথ্যে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয় ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে বলা হয়েছে, কোড চুরির যে অভিযোগ উঠেছে তা তাঁর মনগড়া। ২০১৩ সালে মৈনাকে পিএইচডি থিসিস জমা দেন বলে জানা গিয়েছে। সেই থিসিসে মৈনাক ক্লুগকে তাঁর মেন্টর হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে খবর।
খড়্গপুর আইআইটি-র অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ১৯৮৭ সাল থেকে অধ্যাপনা করছেন মানসকুমার লাহা। তিনি বলেন, ‘‘নামটা চেনা লাগছে। তবে এত ছাত্রের ভিড়ে মনে করতে পারছি না। কিন্তু এমন একটা ঘটনার সঙ্গে আমাদের বিভাগের নাম জড়িয়ে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। সেই সঙ্গে এটাও ঠিক উনি ওই দেশে ঠিক কী পরিস্থিতিতে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখানে বসে বিচার করা সম্ভব নয়।’’ শোনা যাচ্ছে তাঁর বাড়ি দুর্গাপুরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy