Advertisement
E-Paper

বিধি ভেঙে চুম্বন! ইস্তফা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে হ্যানককের কয়েকটি ছবি প্রকাশিত হয়। সেই সব ছবি হ্যানকক আর জিনার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২১ ০৫:৫০
মে মাসে এক অনুষ্ঠানে জিনা ও হ্যানকক

মে মাসে এক অনুষ্ঠানে জিনা ও হ্যানকক রয়টার্সের ফাইল চিত্র।

বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে নয়, ‘কোভিড বিধি ভাঙার’ জন্য ইস্তফা দিয়েছেন ব্রিটেনের সদ্য প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে লেখা ইস্তফাপত্রে এ কথাই উল্লেখ করেছেন তিনি।

কোভিড অতিমারির এই কঠিন সময়ে হ্যানকক ব্রিটেনের বাসিন্দাদের বারবার বলছিলেন— মাস্ক পরুন, পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখুন, নিজের বাড়ির লোক ছাড়া কাউকে আলিঙ্গন করবেন না। এখানকার মানুষের অভিবাদন জানানোর যা প্রচলিত রীতি, সেই ‘হাগ অ্যান্ড কিস’-কে তিনি ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছিলেন, সংক্রমণের আশঙ্কায়। পরিস্থিতির একটু উন্নতি হওয়ায় গত মাসের ১৭ তারিখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুমতি দেন, এক বাড়িতে না-থাকলেও আত্মীয়-বন্ধুকে আলিঙ্গন করা যাবে। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন অনেকেই।

সেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীই কি না তাঁর সহকর্মী জিনা কোলাড্যাঞ্জেলোকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছেন! গত শুক্রবার, ২৫ জুন একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে হ্যানককের কয়েকটি ছবি প্রকাশিত হয়। সেই সব ছবিতে দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রথমে উঁকি মেরে দেখছেন বাইরে কেউ আছেন কি না। তার পরে টুক করে দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন। পরের ছবিগুলো হ্যানকক আর জিনার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের। তাদের ওয়েবসাইটে পুরো ভিডিয়োটি আপলোডও করে দিয়েছে ট্যাবলয়েডটি (আনন্দবাজার অবশ্য সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)।

সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, ছবিগুলি ৬ মে-র। আর পারস্পরিক দূরত্ববিধিতে কিছুটা হলেও ছাড় ঘোষণা করা হয় ১৭ মে। অর্থাৎ, হ্যানকক যে করোনা-বিধি ভেঙেছেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই। যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশবাসীকে বারবার পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলার সালিশি দিচ্ছিলেন, তাঁর এ-হেন আচরণে তাজ্জব ও ক্ষুব্ধ দেশের মানুষ। কারণ তিনিই তো নিদান দিয়েছিলেন, কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যদি আলাদা বাড়িতে থাকেন, তা হলে দেখা হলেও নাতি-নাতনিকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে পারবেন না তাঁরা। অথবা, কারও প্রেমিক-প্রেমিকা যদি লিভ-ইন পার্টনার না-হন, তা হলে শারীরিক সম্পর্কে আপাতত না-জড়ানোই ভাল। এই রকম হাজারো বিধিনিষেধ আরোপ করে শেষে নিজেই কি না...! তা হলে কি মন্ত্রীদের জন্য এক রকম, আর সাধারণ মানুষের জন্য আর এক ধরনের বিধিনিষেধ? গত দু’দিন ধরে এই সব অভিযোগই ঘুরেছে ব্রিটেনবাসীর মুখে মুখে।

ভিডিয়ো ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরে সে দিনই ‘কোভিড বিধি ভাঙার জন্য’ দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন হ্যানকক। প্রধানমন্ত্রী জনসন তাঁর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, এখানেই এই আলোচনার ইতি টানা হোক। কিন্তু দাঁড়ি টানতে দেননি বরিসের সতীর্থরাই। কনজ়ারভেটিভ এমপিরা প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিয়ে বলেন যে, দীর্ঘ লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধের ফলে দেশবাসীর মনে অসন্তোষ ক্রমেই দানা বাঁধছে। তার পরে যদি ম্যাট পদেই থেকে যান, তা হলে পরিস্থিতি সামলানো মুশকিল হবে। চাপের মুখে গতকাল ইস্তফা দেন ম্যাট। দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘অতিমারির মোকাবিলায় এনএইচএস কর্মীরা যে ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন, সাধারণ মানুষ যে ভাবে নানা কৃচ্ছসাধন করছেন, তাঁর জন্য তাঁদের অভিনন্দন। আমার কোনও আচরণে যাতে ভুল বার্তা না যায়, তাই আমি ইস্তফা দিচ্ছি।’’

আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরামর্শদাতার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জিনাও। তিন সন্তানের বাবা ম্যাট এবং তিন সন্তানের মা জিনা। অক্সফোর্ডে পড়াকালীন তাঁদের আলাপ। জিনার স্বামী ধনকুবের অলিভার ট্রেস। দুই পরিবারের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা ছিল। তবে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে আগে কোনও গুঞ্জন শোনা যায়নি।

london COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy