আমেরিকা চাইছে, রাশিয়ার দাবির সামনে আত্মসমর্পণ করুক ইউক্রেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য সামরিক সাহায্য বন্ধ করায় এমনটাই মনে করছেন ইউক্রেনের সংসদের বিদেশ কমিটির প্রধান ওলেকজ়েন্ডার মেরেঝকো। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, “বিষয়টি দেখতে খুব খারাপ লাগছে। দেখে মনে হচ্ছে তিনি (ট্রাম্প) আমাদের আত্মসমর্পণের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আমরা যাতে রাশিয়ার দাবি মেনে নিই, সেই চেষ্টা চলছে।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের প্রকাশ্য বাগ্বিতণ্ডার পর থেকেই দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এই আবহে মঙ্গলবার ভোরে (ভারতীয় সময় অনুসারে) জানা যায়, কিভকে সামরিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক এএফপি-কে বলেন, “শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে স্থির রয়েছেন প্রেসি়ডেন্ট (ট্রাম্প)। আমরা চাই আমাদের বন্ধুরাও সেই একই লক্ষ্যে স্থির থাকুক। আমরা তাই আপাতত সাহায্য (ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য) বন্ধ রেখে তা পর্যালোচনা করছি, যাতে এর মাধ্যমে কোনও সমাধানের পথ বেরোয়।”
হোয়াইট হাউস থেকে সরকারি ভাবে এর কারণ জানানো না-হলেও ওই আধিকারিকের কথা থেকেই আমেরিকার উদ্দেশ্যের আভাস মিলেছে। হোয়াইট হাউসের আধিকারিক সূত্রে সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, আমেরিকা চায় রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হোক ইউক্রেন। বস্তুত, হোয়াইট হাউসের বৈঠকেও জ়েলেনস্কিকে সমঝোতার পরামর্শ দেন ট্রাম্প এবং ভান্স। কিন্তু জ়েলেনস্কি তা মানতে পারেননি। পরে যৌথ বিবৃতির সময়েও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কথা উঠে আসে।
আরও পড়ুন:
তপ্ত বাক্যবিনিময়ের সময়েই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রসঙ্গে জ়েলেনস্কি বলেছিলেন, “অনেক চুক্তি করে দেখেছি। কিন্তু তার পরেও বার বার উনি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছেন। আমাদের দেশের মানুষদের মেরেছেন। বন্দিদের ফেরত দেননি। কোনও শর্ত মানেননি।” বিতণ্ডার মাঝে ট্রাম্পও তাঁকে শুনিয়েছিলেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নিয়ে আপনি ছিনিমিনি খেলছেন। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন। আমেরিকাকে অপমান করছেন।” জ়েলেনস্কিকে সতর্ক করে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আপনারা এই যুদ্ধে জিততে পারবেন না। আমাদের সাহায্যে আপনি এর মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। আমাদের অস্ত্র না-পেলে দু’সপ্তাহও টিকত না এই যুদ্ধ।”