যুদ্ধের খবর পেতে মুহুর্মুহু ফোন ঘেঁটে চলেছেন তাঁরা। ছবি: পিটিআই
যত্রতত্র আবর্জনা ছড়িয়ে। চারিদিকে পড়ে খালি খাবারের প্যাকেট। কয়েকটি থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করেছে। তার মধ্যেই চাদরের উপরে শুয়ে বহু মানুষ। কিভের বিভিন্ন ভূগর্ভস্থ পথের এটাই এখন পরিচিত দৃশ্য। রুশ আগ্রাসনের হাত থেকে বাঁচতে কিভের সাবওয়েতে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। জায়গার অভাবে সাবওয়েগুলির চলমান সিঁড়িগুলিতেও বসে শতাধিক মানুষ।
তবে এই পরিস্থিতিতে আটকে থাকা পুরুষদের থেকেও আরও উদ্বিগ্ন মহিলারা, মায়েরা। যুদ্ধের খবর পেতে মুহুর্মুহু ফোন ঘেঁটে চলেছেন তাঁরা। পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচানোর তাগিদে মরিয়া হয়ে পথ খুঁজছেন তাঁরা। আব্রু রক্ষায় সাবওয়ের মধ্যে কেউ কেউ ছোট ছোট তাঁবুও খাটিয়েছেন। তবে সকলের সকলের চোখে মুখেই অনিশ্চয়তা আর ভয়। একটাই প্রশ্ন— কবে ঠিক হবে পরিস্থিতি।
স্বেচ্ছাসেবকরা মাঝে মধ্যে এসে খাবার এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে গেলেও খিদের তাড়নায় তা ফুরোচ্ছে শীঘ্রই। তার পর আবার দীর্ঘ প্রতিক্ষা।
সাবওয়ের মানুষদের ভিড়ে রয়েছে ন’বছর বয়সি উলিয়ানাও। গত ছ’দিন ধরে মা এবং পোষা বিড়াল নিয়ে ডোরোহোজিচি স্টেশনের সাবওয়েতে তার ঠাঁই হয়েছে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অল্প দিনেই যেন অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে সে। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে উলিয়ানা বলে, ‘‘এখানের পরিস্থিতি একদমই আরামদায়ক নয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আমাদের এখানেই মানিয়ে নিতে হবে। বাইরের থেকে এখানে থাকাই বেশি নিরাপদ।’’
শুধু সাবওয়ে নয়। কিভের একটি প্রসূতি হাসপাতালের চিকিত্সকরা অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য হাসপাতালের বেসমেন্টে চেম্বার তৈরি করেছেন৷ হাসপাতালের প্রধান দিমিত্রো গভসেয়েভ জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত ওই জায়গায় পাঁচটি শিশুর জন্ম হয়েছে।
ইউক্রেনবাসীদের জীবন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকলেও এখনও পর্যন্ত কিভ নিয়ে নিজেদের চিন্তাভাবনা প্রকাশ্যে আনেনি মস্কো। রুশ আগ্রাসনের মুখে পড়ে ইতিমধ্যেই প্রাণের বলি দিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ। ইউক্রেন সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের বলি হয়েছেন অন্তত দু’হাজার সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে অন্তত ন’লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy