পাকিস্তানকে ২০৩০ সালের মধ্যে নতুন সর্বাধুনিক ‘আকাশ থেকে আকাশ’ (এয়ার-টু-এয়ার) ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে আমেরিকা— এই মর্মে যে খবর প্রচারিত হয়েছিল, তার ভুল ধরিয়ে দিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বিতর্কের মাঝে পূর্বঘোষণার নতুন ব্যাখ্যা দেওয়া হল। বলা হল, আদৌ পাকিস্তানকে কোনও নতুন ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথা বলা হয়নি। পূর্বের রক্ষণাবেক্ষণ এবং খুচরো যন্ত্রাংশের একটি বিদেশি সামরিক চুক্তিতে সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে মাত্র। শুধু পাকিস্তান নয়, একাধিক দেশের ক্ষেত্রেই ওই চুক্তি পরিবর্তন হয়েছে।
শুক্রবার ভারতে অবস্থিত আমেরিকার দূতাবাস থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্রের চুক্তি সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল, তা ‘ভুয়ো’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে নতুন ব্যাখ্যা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ ওয়ার (সাবেক প্রতিরক্ষা দফতর) কয়েকটি চুক্তি ঘোষণার তালিকা প্রকাশ করেছিল। তাতে বিদেশি সামরিক বিক্রয় চুক্তিতে (রক্ষণাবেক্ষণ এবং খুচরো যন্ত্রাংশ) কিছু পরিবর্তনের কথাও বলা হয়েছিল। পাকিস্তান-সহ অনেক দেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য। কিছু সংবাদমাধ্যমের ভুয়ো রিপোর্টের বিপরীতে প্রশাসন একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চায়। এই চুক্তি সংশোধনের কোনও অংশে পাকিস্তানকে নতুন এআইএম-১২০ডি-৩ মাঝারি পাল্লার ‘আকাশ থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র (এএমআরএএএম) দেওয়ার কথা বলা হয়নি। পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতা বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনা চুক্তিতে আলোচিত হয়নি।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, চুক্তি সংশোধনের কথা বলে মার্কিন প্রশাসন পূর্বে যে বিবৃতি দিয়েছিল, তাতে পাকিস্তান ছাড়াও ব্রিটেন, পোল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, রোমানিয়া, কাতার, ডেনমার্ক, সুইৎজ়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস্, সৌদি আরব প্রভৃতি দেশের কথা রয়েছে।
প্রায় চার দশক আগে আমেরিকার কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেয়েছিল পাকিস্তান। গত মে মাসে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনা সংঘর্ষের সময় ওই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়। মনে করা হচ্ছিল, এএমআরএএএম পেলে তা এফ-১৬ যুদ্ধবিমানেই বসানো হবে। তান ছাড়াও ব্রিটেন, পোল্যান্জ, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং সে দেশের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ সমঝোতা আরও নিবিড় করার সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। তাই মার্কিন প্রশাসনের বিবৃতিতে এএমআরএএএম ক্ষেপণাস্ত্র ঘিরে চর্চা জোরালো হয়েছিল। পাক সংবাদমাধ্যমগুলিও নতুন সামরিক চুক্তি হিসাবে এর ঢালাও প্রচার করেছিল। কিন্তু মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতি আপাতত সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিল।