Advertisement
E-Paper

মার্কিন সরকারে ‘শাটডাউন’! অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন, সেনেটের অনুমোদন মিলল না ব্যয়-বিলে

মঙ্গলবারই ছিল আমেরিকার অর্থবর্ষের শেষ দিন। মার্কিন সরকারের জন্য বরাদ্দ তহবিলের মেয়াদ ওই দিনই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন বিলের জন্য একমত হতে পারেননি সেনেটের সদস্যেরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:০৫
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হয়ে যেতে চলেছে আমেরিকার সরকার। মার্কিন সেনেট মঙ্গলবার প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে পারেনি। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটেরা এই বিল নিয়ে একমত হতে পারেননি। ফলে বুধবার থেকেই সরকারি কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাবে। হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিক ভাবে আসন্ন ‘শাটডাউন’ ঘোষণা করে দিয়েছে। এর ফলে বিমানযাত্রা থেকে শুরু করে বিনিয়োগ, গবেষণা— বহু ক্ষেত্রে কোপ পড়তে পারে। শুধুমাত্র আপৎকালীন পরিষেবাগুলি সচল থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে আমেরিকার সরকারে ‘শাটডাউন’ হয়েছিল ছ’বছর আগে, প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফায়।

১ অক্টোবর থেকে আমেরিকায় অর্থবর্ষ শুরু হয়। চলে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেই হিসাবে মঙ্গলবারই ছিল চলতি অর্থবর্ষের শেষ দিন। মার্কিন সরকারের জন্য বরাদ্দ তহবিলের মেয়াদ ওই দিনই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন বিলের জন্য একমত হতে পারেননি সেনেটের রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট সদস্যেরা। শেষ মুহূর্তে রিপাবলিকানেরা একটি সাময়িক তহবিল পাশ করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেনেট তাতে অনুমোদন দেয়নি। ওই বিল স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্টের টেবিলে পাঠাতে গেলে যে পরিমাণ ভোটের প্রয়োজন হয়, তা মেলেনি। ডেমোক্র্যাটেরা সাময়িক তহবিলে অনুমোদন দেননি বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর। মার্কিন সেনেটে মোট সদস্য সংখ্যা ১০০। সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিল পাশ করাতে হলে তার পক্ষে অন্তত ৬০টি ভোট প্রয়োজন হয়। সেনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩।

সরকারি তহবিল নিয়ে সেনেট সদস্যদের মধ্যে হোয়াইট হাউসে একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু মার্কিন সরকার যে অচলাবস্থার দিকে এগোতে চলেছে, তা সোমবারই একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সোমবারের বৈঠক থেকে বেরিয়ে ডেমোক্র্যাট সেনেট-সদস্য চাক স্কুমার জানিয়েছিলেন, দু’পক্ষের মধ্যেই এখনও অনেক মতানৈক্য রয়ে গিয়েছে।

তহবিল সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি না-হওয়ায় ডেমোক্র্যাটদেরই দোষারোপ করছেন ট্রাম্প। তিনি ইতিমধ্যে গণছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। বলেছেন, ‘‘শাটডাউনের অনেক ভাল দিকও রয়েছে। আমরা যেগুলো চাই না, তেমন অনেক জিনিস ফেলে দিতে পারি। অনেককে ছাঁটাই করা হবে। তাঁরা প্রত্যেকে হবেন ডেমোক্র্যাট।’’

‘শাটডাউনে’ কী হবে

সরকারে ‘শাটডাউন’-এর অর্থ হল, অর্থের অভাবে সরকার তার কাজ চালাতে পারছে না। কোনও প্রকল্পের জন্য বা কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো অর্থও সরকারের তহবিলে নেই। মার্কিন সরকারে এই ‘শাটডাউন’ শুরু হয়ে যাচ্ছে বুধবার থেকেই (স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ১২টার পর)। এর ফলে সরকারের যে সমস্ত বিভাগের কাজ জরুরি পরিষেবার তালিকায় পড়ে না, সেই বিভাগগুলি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। হাজার হাজার সরকারি কর্মীর বেতন সাময়িক ভাবে বন্ধ হবে। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক, নিরাপত্তাজনিত প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা হবে। আমেরিকার সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী এবং এয়ার ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণকারীদের কাজ করে যেতে হবে। ‘শাটডাউন’ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বেতন পাবেন না তাঁরা। এ ছাড়াও বহু দফতর কর্মীদের সাময়িক ভাবে বসিয়ে দিতে বাধ্য হবে। ছোটখাটো ব্যবসার জন্য ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। ফলে আমেরিকার সাধারণ মানুষ চূড়ান্ত সঙ্কটের মধ্যে পড়তে চলেছেন। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম দফায় মার্কিন প্রশাসন ৩৫ দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল। এখনও পর্যন্ত আমেরিকার ইতিহাসে সেটাই সবচেয়ে বড় ‘শাটডাউন’।

Donald Trump US Shutdown US Senate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy