Advertisement
E-Paper

ইরানের পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে যায়নি, কর্মসূচি কয়েকটা মাস পিছিয়ে গিয়েছে মাত্র: মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাথমিক রিপোর্ট

আমেরিকা হামলা চালানোর আগেই সমৃদ্ধ ইউনেরিয়াম ইরান অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাথমিক রিপোর্টে। তাঁদের সন্দেহ, হামলার পরে ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড মাত্র কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫ ১৪:৩৬
ইরানের পরমাণুকেন্দ্র।

ইরানের পরমাণুকেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।

মার্কিন হানায় ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ড সামান্য হোঁচট খেয়েছে মাত্র, পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি! এমনটাই আভাস মিলেছে আমেরিকার গোয়েন্দাদের প্রাথমিক রিপোর্টে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ অনুসারে, একটি গোপন প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলার পরে তাদের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড মাত্র কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে।

ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র ফোরডো, নাতান্‌জ় এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকার সামরিকবাহিনী। ওই হামলার পরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। ওই গোপন রিপোর্ট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাধিক আধিকারিকের সূত্রে ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ জানিয়েছে, হামলায় দু’টি পরমাণুকেন্দ্রের প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভূগর্ভস্থ ভবনগুলিকে ধ্বংস করা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে।

আমেরিকার হামলার আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি মনে করছিল, ইরান যদি পরমাণু বোমা বানানোর জন্য খুব তাড়াহুড়ো করে, তা হলেও তিন মাস সময় লাগতে পারে। পরমাণুকেন্দ্রে হামলার পরে মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে অনুমান করা হচ্ছে, এই হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ডকে পিছিয়ে দেওয়া গিয়েছে। তবে খুব বেশি সময়ের জন্য নয়। খুব বেশি হলে ছ’মাস পিছিয়ে দেওয়া গিয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি।

তা ছাড়া আমেরিকা হামলা চালানোর আগেই সমৃদ্ধ ইউনেরিয়াম ইরান অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে ওই রিপোর্টে। ফলে তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক দ্রব্যাদির খুব সামান্যই ধ্বংস হয়ে থাকতে পারে। বাকি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামকে ইরান বিভিন্ন গোপন আস্তানায় সরিয়ে ফেলেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।

বস্তুত, ইরানে হামলার পরই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ‘সফল ভাবে’ ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে সেগুলি। তার পরে গত কয়েক দিনে বার বার একই দাবিই করে এসেছেন ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন। মার্কিন গোয়েন্দাদের এই রিপোর্টের সঙ্গে একমত নন ট্রাম্প। তিনি নিজের পুরনো অবস্থানেই অনড়। ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘ইজ়রায়েল এবং ইরান, উভয়ই সমান ভাবে যুদ্ধ বন্ধ করতে চেয়েছিল। সমস্ত পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করা এবং তার পরে যুদ্ধ বন্ধ করা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের ছিল!’’ হোয়াইট হাউসও ট্রাম্পের কথায় সায় দেয়। মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাথমিক মূল্যায়নের রিপোর্টকে ‘সম্পূর্ণ ভুল’ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইজ়রায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজ়ালেল স্মোট্রিচও মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাথমিক রিপোর্ট মানতে অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “ঠিক কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কেউই জানে না। এর জন্য আরও কিছুটা সময় লাগবে।”

যদিও ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ অনুসারে, আধিকারিকদের অপর একটি অংশের বক্তব্য, তিনটি পরমাণুকেন্দ্রেই কোথাও বড়সড়, কোথাও মাঝারি মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নাতান্‌জ় পরমাণুকেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি বলে দাবি ওই আধিকারিকদের। তবে সেগুলিকে আবার নতুন করে তৈরি করার কোনও পরিকল্পনা ইরানের রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি ইরান কিছু ছোট ছোট গোপন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র তৈরি করে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন ইজ়রায়েলের আধিকারিকেরা। বড় পরমাণুকেন্দ্রগুলিতে হামলা হলেও যাতে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া যায়, সে জন্যই এগুলি তৈরি করা হয়েছে বলে অনুমান।

পাঁচ পাতার ওই গোপন রিপোর্টটি শুধুমাত্র একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন বলে ব্যাখ্যা করছেন আমেরিকার আধিকারিকেরা। আরও তথ্য সংগ্রহ করার পরে এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিশদ জানা যাবে।

Iran Donald Trump US Intelligence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy