Advertisement
E-Paper

সেনার শুল্কহীন বিপণিতে বিক্রি হচ্ছে ট্রাম্পের পারিবারিক সংস্থার তৈরি মদ! ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ

পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলি বলছে, সেনা বিপণিতে ট্রাম্পের সংস্থার পণ্য বিক্রির ফলে সরাসরি আইনভঙ্গ হচ্ছে না। তবে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে প্রেসিডেন্টের পরিবার। বেতন ছাড়াও প্রেসিডেন্টকে আরও আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:১৪
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ বার ফোর্বস পত্রিকা দাবি করল, সেনাদের বিপণিতে (মিলিটারি স্টোর) ট্রাম্প ব্র্যান্ডের ওয়াইন বিক্রি হচ্ছে। সেই লাভ তুলছে ট্রাম্পের পরিবার। সমাজকর্মীদের অভিযোগ, এ ভাবে বেতন ছাড়াও বাড়তি আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। প্রশাসন অবশ্য বলছে, এর ফলে নিয়মভঙ্গ হচ্ছে না। সমালোচকদের একাংশ বলছে, ট্রাম্প পরিবারের সব ক্ষেত্র থেকে লাভ পকেটে পোরার প্রবণতার কারণেই ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রভাবিত হয়েছে।

পত্রিকার প্রতিবেদনে অনুসারে, ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনিয়া, সেন্টারভিলে সেনাদের জিনিসপত্র কেনার জন্য যে শুল্কহীন বিপণি রয়েছে, সেখানেই বিক্রি হচ্ছে ট্রাম্পের ব্র্যান্ডের ওয়াইন এবং সাইডার। এগুলি যে বিক্রি হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছে প্রশাসন। তবে তারা জানিয়েছে, এতে কোনও নিয়মভঙ্গ হচ্ছে না। এতে প্রেসিডেন্টের কোনও ভূমিকাও নেই।

যদিও পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলি তা মানছে না। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে প্রায় নিংড়ে নেওয়া হচ্ছে। সরাসরি আইনভঙ্গ না হলেও আর্থিক সুবিধা নেওয়া হচ্ছে। সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিকস ইন ওয়াশিংটন (ক্রিউ) মুখপাত্র জর্ডন লিবোউইৎজ় বলেন, ‘‘এখানে আইনি বিষয় না থাকলেও নীতির বিষয় জড়িত।’’ তিনি আরও জানান, সরকার যদি ট্রাম্পের সংস্থার পণ্য পাইকারি হারে কেনে, তা হলে তা আদতে সংবিধানেরই বিরোধিতা করছে। বেতন ছাড়াও প্রেসিডেন্টকে আরও আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে।

সমালোচকদের একাংশ বলছে, ট্রাম্প পরিবারের আর্থিক লাভ করার প্রবণতাই ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছে। ২০২৫ সালের শুরুতে ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনানশিয়াল (ডব্লিউএলএফ) নামে একটি আর্থিক সংস্থা পাকিস্তানের একটি নতুন ক্রিপ্টো কাউন্সিল সংস্থার সঙ্গে চুক্তি (লেটার অফ ইনটেন্ট) করে। ডব্লিউএলএফ বেশির ভাগ শেয়ার রয়েছে ট্রাম্প পরিবারের হাতে। সূত্রে খবর, ওই সংস্থার ৬০ শতাংশ শেয়ার প্রেসিডেন্টের পরিবারের হাতে। ট্রাম্প নিজে ওই সংস্থার ‘চিফ ক্রিপ্টো অ্যাডভোকেট’। পুত্র এরিক এবং ডোনাল্ড জুনিয়রও শীর্ষ পদে রয়েছে। চুক্তিটি করেছিলেন ট্রাম্পের সহযোগী স্টিভ উইটকফের পুত্র জ়াখারি উইটকফ। ঘটনাচক্রে, ওই চুক্তি সইয়ের পরে ২৬ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা হয়। ওই জঙ্গিরা পাকিস্তানের মদতপুষ্ট বলে জানিয়েছে ভারত। কেউ কেউ মনে করেন, ট্রাম্পের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পরে পাকিস্তানের হাত একটু শক্ত হয়েছিল।

পাকিস্তানের সংস্থার সঙ্গে ট্রাম্পের সংস্থার চুক্তি ভাল চোখে দেখেননি আমেরিকার অনেকেই। আমেরিকার প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান মনে করেন, এই চুক্তির কারণেই পাকিস্তানের সঙ্গে সুয়োরানির মতো আচরণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভারতের তুলনায় তাকে নেকনজরে দেখেছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে একটি সাক্ষাৎকারে সুলিভান দাবি করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে পাশে সরিয়ে রেখেছেন’ ট্রাম্প। প্রযুক্তি, অর্থনীতি ক্ষেত্রে দীর্ঘ কাল ধরে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার যে সহাবস্থান ছিল, তা ধাক্কা খেয়েছে।

পাকিস্তানকে ক্রিপ্টো হাব হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সে দেশের অর্থমন্ত্রী মহম্মদ অওরঙ্গজ়েবকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ক্রিপ্টো বিনিময় মাধ্যম বিনান্সের প্রতিষ্ঠাতা চাংপেং ঝাও। আমেরিকায় টাকা তছরুপ আইন ভঙ্গ করার জন্য ২০২৩ সালের নভেম্বরে এই ঝাও দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। গত মাসে তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও পরে দাবি করেন, তিনি ঝাওকে চেনেন না। তার পরেই প্রশ্ন উঠছে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্যই কি সাজা মকুব হল ঝাওয়ের? যেই পরামর্শ পাকিস্তান মেনে চলার কারণে আখেরে পরোক্ষে লাভ হচ্ছে ট্রাম্পের সংস্থার!

Donald Trump US Pakistan Pahalgam Incident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy