ইরানের নির্দিষ্ট কিছু নিশানায় আঘাত হানতে চাইলেও পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষে নিজেদের পুরোপুরি জড়িয়ে ফেলতে চাইছে না আমেরিকা। যুদ্ধে না জড়িয়েও কী ভাবে ওই লক্ষ্যবস্তুগুলিতে আঘাত হানা যায়, তা নিয়ে আমেরিকার শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। একাধিক সূত্রের ভিত্তিতে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘সিএনএন’-এর এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার ইরানের পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি বাহিনী। প্রত্যাঘাত করে ইরানও। তার পর থেকে টানা সাত দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে পশ্চিম এশিয়ার দুই দেশের। তবে এই সংঘর্ষ যাতে আর বেশি দিন না গড়ায়, তা নিশ্চিত করাই এখন ট্রাম্পের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে দাবি ওই সূত্রের। ‘সিএনএন’-কে দুই ইউরোপীয় রাষ্ট্রের কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে হামলা শুরুর পরে ইজ়রায়েল প্রথম এক সপ্তাহে কতটা সাফল্য পেল, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন ট্রাম্প। এর পরেই তিনি কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। গত শনি-রবিবার আমেরিকার কিছু বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে এমনটাই খবর ছিল বলে দাবি ওই সূত্রের।
ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালানোর জন্য তিনি আমেরিকার সামরিক বাহিনীকে কোনও নির্দেশ দেবেন কি না, তা নিয়ে বুধবারও প্রশ্ন করা হয়েছিল ট্রাম্পকে। তবে সেই নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বুঝিয়ে দেন, ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষে আমেরিকাও যোগ দেবে কি না, সে বিষয়ে তিনি এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। ট্রাম্প বলেন, “আমি করতেও পারি, আবার না-ও করতে পারি। আমি কী করতে চলেছি, তা কেউই জানে না।” ঘটনাপরম্পরা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছেন, ইরানের উপর হামলার পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে শুরু করেছেন ট্রাম্প। তবে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড থেকে তেহরান পিছিয়ে আসে কি না, তা-ও দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, ট্রাম্প সরাসরি মন্তব্য না-করলেও নিজের বক্তব্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি অপেক্ষা করতে চাইছেন। তাঁর কথায়, “আমি কোনও কিছু চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এক সেকেন্ড আগে সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করি। বিশেষ করে যুদ্ধের ক্ষেত্রে, সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু পরিবর্তন হতে থাকে। একটি অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত একটি অবস্থানেও বিষয়টি চলে যেতে পারে।” ওয়াকিবহাল এক সূত্র ‘সিএনএন’-কে জানিয়েছেন, ট্রাম্প সম্ভাব্য বিকল্পগুলি বিবেচনা করে দেখছেন। ওই সূত্রের দাবি, আমেরিকা হামলা করা মানেই যে অন্য দু’টি দেশের যুদ্ধে সম্পূর্ণ ভাবে ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করছে, এমন ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই ট্রাম্প মনে করেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চলতি সপ্তাহের শেষেই ইরানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে আমেরিকা। আমেরিকার শীর্ষ আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ নিউজ়’। তাদের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে আলোচনা চলছে। শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বদলানো হতে পারে। হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক নাম প্রকাশ না-করার শর্তে ‘ব্লুমবার্গ’-কে বলেছেন, সব ধরনের বিকল্প পথই খুলে রাখা হচ্ছে।