যে দেশগুলির সঙ্গে আলাদা করে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে না, তাদের উপর ১৫-২০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক চাপাবে আমেরিকা। সোমবার এমনটাই আভাস দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত এপ্রিলের ঘোষণা অনুসারে, সব দেশের উপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। এ বার তা আরও বৃদ্ধি করে ১৫-২০ শতাংশ করতে চলেছেন তিনি।
সোমবার স্কটল্যান্ডের টার্নবেরিতে নিজের অভিজাত গল্ফ রিসর্টে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক সারেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। সেখানেই মার্কিন শুল্কনীতির প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি জানান, শীঘ্রই মার্কিন প্রশাসন প্রায় ২০০টি দেশকে নতুন শুল্কের কথা জানিয়ে দেবে। বাণিজ্যিক সমঝোতা না-হওয়া দেশগুলির জন্য আমেরিকার এই ন্যূনতম শুল্ককে নতুন ‘বৈশ্বিক শুল্ক’ বলে ব্যাখ্যা করেন ট্রাম্প।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কথায়, “এটি (বৈশ্বিক শুল্ক) ১৫-২০ শতাংশের মধ্যে থাকবে। হয়তো এই দু’টি শুল্কহারের মধ্যে কোনও একটি ধার্য হবে।” বস্তুত, দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমেরিকার বাণিজ্যিক ঘাটতি দূর করতে উদ্যোগী হয়েছেন ট্রাম্প। আমেরিকার বাজারে ভিন্দেশি পণ্যের উপর নতুন হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গত এপ্রিলে আমেরিকার নয়া শুল্কনীতি ঘোষণার পরেও তা স্থগিত রাখেন ট্রাম্প। বাণিজ্যিক সমঝোতার জন্য সময় দেন বিভিন্ন দেশকে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে নিয়েছে তাঁর প্রশাসন। তবে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দর কষাকষি এখনও চলছে আমেরিকার।
আগামী ১ অগস্ট থেকে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন শুল্কনীতি কার্যকর করছে। এই সময়সীমা যে আর বর্ধিত করার পরিকল্পনা নেই, সেই আভাস আগেই দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশকে শুল্কচিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। ব্রাজ়িলকে চিঠি পাঠিয়ে একতরফা ৩০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
গত রবিবারই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে নিয়েছে আমেরিকা। এই চুক্তির আওতায় আগামী তিন বছরে আমেরিকা থেকে ৭৫ হাজার কোটি ডলারের জ্বালানি কিনবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সঙ্গে তারা ৬০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগও করবে আমেরিকায়। এর পরিবর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশির ভাগ পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে আমেরিকার বাজারে। এ ছাড়া জাপানের সঙ্গেও চুক্তি সেরে নিয়েছে আমেরিকা। ব্রিটেন, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামের সঙ্গেও ছোট ছোট কিছু চুক্তি হয়েছে। ভারত-সহ অন্য দেশগুলির সঙ্গে আলোচনা এখনও চলছে। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার (১ অগস্ট)-এর সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে খুব বেশি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ট্রাম্প বার বার দাবি করেছেন, তিনি বাণিজ্যের জটিল দর কষাকষির চেয়ে সোজাসাপটা শুল্কহার বসানোকেই বেশি পছন্দ করেন। সোমবার ফের এক বার সেই অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা মূলত বাকি বিশ্বের জন্য শুল্ক স্থির করে দিতে চলেছি। তারা যদি আমেরিকায় ব্যবসা করতে চায়, তবে তাদের এই শুল্ক দিতে হবে। কারণ, আমি ২০০টি চুক্তি করতে পারব না।”