হাতে মাত্র চার দিন। বুধবারই (৯ জুলাই) শেষ হচ্ছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে স্থগিতাদেশের মেয়াদ। তার পরে কি আর সেই মেয়াদ বৃদ্ধি করবেন না কি পূর্ব ঘোষণা মতোই শুল্ক আরোপের পথে হাঁটবেন ট্রাম্প? মেয়াদ বৃদ্ধিতে যে তিনি খুব একটা উৎসাহী নন, তা আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। শনিবার ট্রাম্প জানান, প্রথম দফায় শুল্কনীতি নিয়ে ১২টি দেশকে পাঠানো চিঠিতে সই করেছেন তিনি। তবে সেই তালিকায় কোন কোন দেশ রয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘‘সোমবারই সব জানতে পারবেন।’’
গত ২ এপ্রিল আমেরিকার বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর ‘পারস্পরিক শুল্কে’র কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তালিকায় চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি ভারত বা ইজ়রায়েলের মতো আমেরিকার ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ও ছিল। ভারতের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল আমেরিকা। এ ছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০%, ভিয়েতনাম ৪৬%, জাপান ২৪%, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫%, যুক্তরাজ্য ১০%, তাইল্যান্ড ৩৬% এবং সুইৎজ়ারল্যান্ডের উপর ৩১% শুল্ক চাপানো হয়েছিল। কিন্তু নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (যদিও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়)।
গত তিন মাসে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমেরিকার। এর মধ্যে দু’-একটি বাণিজ্যচুক্তির ঘোষণা হলেও, বাকি দেশগুলির ক্ষেত্রে আরও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে কি? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শুধু তিনি জানান, ১২টি দেশকে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, কোন দেশের জন্য কত পরিমাণ আমদানি শুল্ক ধার্য করেছে মার্কিন প্রশাসন! অনেকের মতে, প্রথমে দেশভিত্তিক যে শুল্কের পরিমাণের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প, বর্তমানে সেই পরিমাণ না-ও থাকতে পারে। বাড়তে পারে শুল্কের পরিমাণ।
আরও পড়ুন:
দিন দুয়েক আগে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ১ অগস্ট থেকে আমেরিকায় ঢোকা পণ্যে বসছে আমদানি শুল্ক। কোনও দেশের উপর ৭০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হতে পারে। প্রশ্ন উঠছে, এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে কোন পথে হাঁটবে আমেরিকা? দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে গত তিন মাসে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি চুক্তি। পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা নিশ্চিত করে দিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তির রূপরেখা স্থির করা কঠিন বলেই অনেকে মনে করছেন। ঘটনাচক্রে, গত আমেরিকায় গিয়ে বাণিজ্য চুক্তির খসড়া নিয়ে আলোচনার পরে চলতি সপ্তাহেই দেশে ফিরে এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজীব আগরওয়ালের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল। আলোচনায় কোনও রফাসূত্র বার হয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তার মধ্যেই ১২ দেশে চিঠি গেল ট্রাম্পের। তবে সেই তালিকায় ভারত আছে কি না, তা জানা যায়নি।