Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
US Presidential Election Result

‘ফার্স্ট লেডি’ হলেও শিক্ষকতা ছাড়ছেন না জিল বাইডেন

দু’শো বছরেরও বেশি আমেরিকার ইতিহাসে এমন নজির বিরল, যেখানে হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি পারিশ্রমিক নিয়ে অন্য কাজও করবেন কোনও ফার্স্ট লেডি।

জিল বাইডেন। —ফাইল চিত্র

জিল বাইডেন। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৩৮
Share: Save:

তিনি পেশায় শিক্ষিকা। দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রয়েছেন সমাজসেবামূলক নানা কাজের সঙ্গে। ফার্স্ট লেডি হওয়ার পরেও তাঁর জীবনযাত্রা যে বিশেষ পাল্টাবে না, তা আগেভাগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন জিল বাইডেন। যেমন পরিবর্তন আসেনি ৮ বছর আমেরিকার সেকেন্ড লেডি থাকার সময়েও। ওয়াকিবহাল শিবিরের মতে, দু’শো বছরেরও বেশি আমেরিকার ইতিহাসে এমন নজির বিরল, যেখানে হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি পারিশ্রমিক নিয়ে অন্য কাজও করবেন কোনও ফার্স্ট লেডি।

পদাধিকারী হিসেবে আমেরিকার ফার্স্ট লেডি হোয়াইট হাউসের ‘হোস্ট’। নিজস্ব অফিসের পাশাপাশি তাঁর অধীনে থাকেন চিফ অব স্টাফ, প্রেস সেক্রেটারি, হোয়াইট হাউস সোশ্যাল সেক্রেটারি, চিফ ফ্লোরাল ডিডাইনার এবং তাঁদের অধীন কর্মী-আধিকারিকরা। রাজনৈতিক ছাড়া সামাজিক ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজনের দায়িত্বভার থাকে তাঁর উপর। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিদেশ সফরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গী হন ফার্স্ট লেডি। মেলানিয়া ট্রাম্প বা মিশেল ওবামারা সে ভাবেই ভারত সফরে এসেছিলেন।

২০০৮ থেকে ’১৬ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে জো বাইডেন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। জিল বাইডেন স্বাভাবিক ভাবেই ছিলেন সেকেন্ড লেডি। সেই সময়েও তিনি কলেজের শিক্ষকতা ও সমাজসেবামূলক কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। গত কয়েক দশক ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত জিল। বাইডেন যে দিন মনোনয়ন নেন, সেদিন কলেজ থেকেই অনলাইনে বিবৃতি দেন তিনি। এ বছরের অগস্টেই তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘আমি অনেক অভিবাসী এবং শরণার্থীকে পড়াই। তাঁদের পড়াতে, তাঁদের সঙ্গে মিশতে আমি ভালোবাসি। আমরা হোয়াইট হাউসে গেলেও কাজ ছাড়ছি না।’’ অন্য দিকে স্ত্রী সম্পর্কে বাইডেন একটি সভায় বলেন, ‘‘আপনাদের সেই প্রিয় শিক্ষকটির কথা ভাবুন, যিনি নিজেকে বিশ্বাস করার পাশাপাশি আপনাদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করেছিলেন। জিল বাইডেন তেমনই এক ফার্স্টলেডি হবেন।’’ জিল অবশ্য নিজেকে ফার্স্ট লেডি বা সেকেন্ড লেডির চেয়েও বেশি পছন্দ ও গর্ব করেন নিজেকে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতেই।

আরও পড়ুন: ট্রাম্প-ভোটবাক্সে কোভিড ‘সংক্রমণ’! নীতীশেরও কি একই পরিণতি?

দুই ছেলে বিউ (বাঁ দিকে) এবং হান্টারের সঙ্গে জো বাইডেন। বিয়ের আগে জিল বাইডেনের সঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত

আরও পড়ুন: একের পর এক হারের খবর, গল্ফ খেলতে গেলেন ট্রাম্প

গত কয়েক দশক ধরে শিক্ষকতা করছেন জিল। দুই বিষয়ে স্নাতকোত্তর জিল ২০০৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ার থেকে শিক্ষাবিদ্যায় ডক্টরেট করেছেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে বসবাসের আগে তিনি একটি কমিউনিটি কলেজ, একটি সরকারি স্কুল ও কিশোরদের একটি মানসিক হাসপাতালে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৯১ থেকে ৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি ডেলাওয়ারের ব্রান্ডিওয়াই হাইস্কুলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন তার স্বামী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন জিল নর্দার্ন ভার্জিনিয়া কমিউনিটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

জিল জ্যাকবস-এর জন্ম ১৯৫১ সালে নিউ জার্সিতে। বড় হয়ে উঠেছেন ফিলাডেলফিয়ায়। ৬৯ বছরের জিল ছিলেন পাঁচ বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। প্রথমে তিনি বিয়ে করেন প্রাক্তন ফুটবলার বিল স্টিভেনসনকে। পরে ১৯৭৫-এ দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন বাইডেনকে। অন্য দিকে বাইডেনেরও প্রথম বিয়ে করা স্ত্রী ও এক বছরের কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয় ১৯৭২ সালে একটি পথ দুর্ঘটনায়। বাইডেন তখন সেনেটর। ওই দুর্ঘটনার পর জিলের সঙ্গে বাইডেনের পরিচয় হয় এবং পরে বিয়ে করেন দু’জনে। ১৯৮২ সালে জন্ম হয় তাদের মেয়ে অ্যাশলির। অন্য দিকে বাইডেনের বড় ছেলের মারা যান ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE