Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
US Election Results 2020

বিভাজন সরিয়ে আমেরিকাকে এক সুতোয় বাঁধার অঙ্গীকার বাইডেনের

আমেরিকাকে বিশ্বের দরবারে ফের সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর বলেও নিজের ভাষণে জানিয়েছেন বাইডেন।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ০৭:৫০
Share: Save:

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিভাজনের রাজনীতিকে সরিয়ে আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করার অঙ্গীকার করলেন জো বাইডেন। করোনা পরিস্থিতির ফলে দেশের বেহাল অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিভাজন সরিয়ে দেশকে একজোট করাই তাঁর লক্ষ্য বলে জানালেন তিনি। সেই সঙ্গে বিশ্বের দরবারে ফের আমেরিকাকে সম্মানজনক স্থানে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর বলেও জানিয়েছেন বাইডেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর পর সমর্থকদের উদ্দেশে বিজয়ীর ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট বাইডেন। ভারতীয় সময় রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ তাঁর সেই ভাষণের আগে মঞ্চে ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত কমলা হ্যারিস। ৪৬তম প্রেসিডেন্ট পদ দখল করার পর বাইডেন মনে করিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকাকে এক দেশ হিসাবেই দেখেন তিনি। ডেমোক্র্যাটদের দলীয় নীল রঙের প্রাধান্য বা রিপাবলিকানদের লাল রং— কোনওটাকেই গুরুত্ব দিতে নারাজ বাইডেন। বরং আমেরিকাকে এক রাষ্ট্র হিসাবে দেখার কথা বলেছেন তিনি। বাইডেনের কথায়, ‘‘লাল বা নীল রাজ্য নয়, আমার নজরে রয়েছে শুধুমাত্র আমেরিকা।’’

দেশে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি অতিমারির আবহে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে টেনে তোলাই যে প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর লক্ষ্য, সে কথাও শোনা গিয়েছে বাইডেনের মুখে। সেই সঙ্গে বর্ণবৈষম্য, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ফলে বিভাজনের সরিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজের অঙ্গীকারও করেছেন তিনি। সমর্থকদের উল্লাসের মাঝে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বাইডেন বলেন, ‘‘যুদ্ধবদ্ধ হওয়ার এটাই সময়। এবং আমেরিকার ক্ষত সারানোরও পালা এসেছে। বিদ্বেষকে পিছনে ফেলে ফের এক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে।’’

আরও পড়ুন: হেরে গেলেন ট্রাম্প, আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন জো বাইডেন

আরও পড়ুন: ভারতীয় মায়ের কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে হোয়াইট ‘হাউসে’, ইতিহাসে ঢুকলেন কমলা হ্যারিস

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই আমেরিকায় ঘটে গিয়েছে জর্জ ফ্লয়েড খুনের মতো ঘটনা। ওই ঘটনাকে ঘিরে আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বেই বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দেখা গিয়েছিল। নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হতে দেখা গিয়েছে, দেশের বহু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট পেয়েছেন বাইডেন। এ দিন নিজের ভাষণে তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। বাইডেন বলেছেন, ‘‘দেশের অ্যাফ্রো-আমেরিকানদের ধন্যবাদ। আপনারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ বার আমি আপনাদের পাশে থাকব।’’

ট্রাম্পকে হারানোর পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে নানা নজির গড়েছেন ৭৭ বছরের জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। আমেরিকার সবচেয়ে বেশি বয়সি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন তিনি। সেই সঙ্গে ১৯৯২ সালের পর তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি এক বার পদে থাকা কোনও প্রেসিডেন্টকে হারালেন। শেষ বার এমনটা করেছিলেন বিল ক্লিনটন। ’৯২-তে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশকে পরাস্ত করেছিলেন তিনি। বাইডেনের পাশাপাশি কমলার জয়ও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রথম অ্যাফ্রো-আমেরিকান-এশীয় হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি।

এ দিন বাইডেনের আগে ভাষণ দেন কমলা। মহিলা হিসাবে প্রথম হলেও তিনি যে শেষতম নন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। কমলার কথায়, ‘‘এই অফিসে প্রথম হলেও আমি হয়তো শেষ মহিলা নই।’’ এ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমেরিকা একটা বার্তা দিয়েছে। আজ প্রত্যেকটি ছোট মেয়ে জানে, এ দেশে তা করে দেখানো সম্ভব।’’ দেশ গড়ার কাজে অ্যাফ্রো-আমেরিকান নারীর অবদান যে প্রায়শই এড়িয়ে যাওয়া হয়, সে কথাও কমলার ভাষণে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘আজ তাঁদের সংগ্রাম এবং দৃঢ়সংকল্পের প্রতিফলন ঘটিয়ে দেখতে চাই কী কী ভার কমানো যায়। এবং আমি তাঁদের গড়ে তোলা পথেই এগিয়ে চলেছি।’’ গণতান্ত্রিক পথে যাতে আরও মানুষের যোগদান থাকে, সে উদ্দেশ্যেও তাঁর সমর্থকেরা কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন কমলা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমেরিকা প্রস্তুত। সেই সঙ্গে জো বাইডেন এবং আমিও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE