মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তার প্রেক্ষিতে কোন দেশ কী পদক্ষেপ করেছে, তা নিয়ে প্রতি বছর রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রক। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। সেই রিপোর্টে অন্যান্য দেশের মতো রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের কথাও। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ‘ন্যূনতম’ ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। পাকিস্তানকে একই বন্ধনীতে রেখে আমেরিকার দাবি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কখনও-সখনও পদক্ষেপ করেছে ইসলামাবাদ। অন্য দিকে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। তবে একই সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু বিষয়ে উদ্বেগের কথাও আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের মানবাধিকার-বিষয়ক বার্ষিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয় নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেই রিপোর্টে ভারতে মানবাধিকার বিষয়ে একাধিক উদ্বেগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মণিপুরের অশান্তি, জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসের ঘটনা, মাওবাদী কার্যকলাপ, পুলিশের এনকাউন্টার, সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ-সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। দাবি করা হয়েছ, ‘‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার জন্য ভারত সরকার বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ করেছে ঠিকই, তবে তা খুবই ন্যূনতম।’’
পাকিস্তান সম্পর্কেও মার্কিন রিপোর্টে প্রায় একই দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টে দাবি, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের চিহ্নিত করে পাকিস্তান সরকার খুবই কম পদক্ষেপ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘বছর জুড়ে পাকিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেনি।’’ জঙ্গি কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি করা হয় রিপোর্টে। উল্লেখ করা হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালোচিস্তানে সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রসঙ্গও।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিন রিপোর্টে ‘জুলাই বিপ্লব’, শেখ হাসিনার সরকারের পতন, তার পরে হাসিনার দেশত্যাগ এবং মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি, গত বছর জুলাই-অগস্টে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছিল। তবে তার পর থেকে পরিস্থিতি তুলনামূলক স্থিতিশীল। যদিও এখনও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। হাসিনার আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্তা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব কমই বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে। তবে সেই তুলনায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় বেশি পদক্ষেপ করেছে।
ট্রাম্প ‘ঘনিষ্ঠ’ দেশগুলি সম্পর্কে মার্কিন রিপোর্টে সমালোচনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সুর নরম করা হয়েছে। রিপোর্টে গত বারের তুলনায় ইজ়রায়েল সরকারের সমালোচনা অনেক কম। গাজ়ায় মানবিক সঙ্কট, অনাহারে মৃত্যু, ইজ়রায়েলি হানার কোনও উল্লেখ নেই! ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে একতরফা ভাবে রাশিয়াকে দায়ী করা হয়েছে রিপোর্টে।