Advertisement
E-Paper

সেনা বাড়িয়ে ট্রাম্প কি তবে যুদ্ধের পথে?

ট্রাম্প কি তা হলে সত্যিই ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছেন— ফের উঠল প্রশ্নটা। ইরানের সঙ্গে আমেরিকার তিক্ততার শুরুটা হয়েছিল এক বছর আগে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ০৩:৫৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনার পারদ আরও এক ধাপ বাড়িয়ে গত কাল সেখানে আরও দেড় হাজার সেনা পাঠানোর ঘোষণা করে বসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মুখে বললেন, ‘‘ছোট্ট পদক্ষেপ।’’ তবে তাঁর নিশানায় যে ইরান, তা ফের স্পষ্ট করে দিলেন। জানালেন, মার্কিন কংগ্রেসকে সবটা জানানো হয়েছে। অথচ খবর পাওয়া গেল, কংগ্রেসের রিভিউ কমিটির তোয়াক্কা না-করে এ দিনই সৌদি আরব এবং আরব জোটের আরও কয়েকটি দেশকে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির ব্যবস্থা প্রায় পাকা করে ফেলেছে তাঁর প্রতিরক্ষা দফতর। ট্রাম্পের দাবি, এটাও ইরানের তরফে আসা হুমকির মোকাবিলা করতে।

ট্রাম্প কি তা হলে সত্যিই ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছেন— ফের উঠল প্রশ্নটা। ইরানের সঙ্গে আমেরিকার তিক্ততার শুরুটা হয়েছিল এক বছর আগে। ইরান পরমাণু চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর থেকেই সে দেশের উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপাতে থাকে ওয়াশিংটন। গত মার্চে, ইরানের ‘রেভোলিউশনারি গার্ডস’ বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ আখ্যা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। দিন কুড়ি আগে এরই পাল্টা ইউরেনিয়াম রফতানি বন্ধের হুমকি দেন রৌহানি। পরিস্থিতি এর পর থেকেই আরও বিগড়ে যায়। উপসাগরীয় এলাকা জুড়ে বোমারু বিমান, নৌবহর মোতায়েন শুরু করে দেয় আমেরিকা। সম্প্রতি জল আরও ঘোলা হয়েছে পারস্য উপসাগরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উপকূলে সৌদি আরবের দু’টি তেলের ট্যাঙ্কার-সহ চারটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার ঘটনায়। চলতি মাসের মাঝামাঝি সৌদি আরবের দু’টি পাম্প স্টেশনে ড্রোন হামলা হয়েছে। এ সবের জন্যও ইরানকে দুষেছে আমেরিকা।

গত কাল পশ্চিম এশিয়ায় উপসাগরীয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের কথা ঘোষণা করতে গিয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষাসচিব প্যাট্রিক শানাহান জানান, ইরানের সাম্প্রতিক হুমকি মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ। প্রেসিডেন্ট নিজে বলেন, ‘‘পশ্চিম এশিয়ায় নিজেদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই অত্যন্ত অল্প সংখ্যক সেনা বাড়ানো হয়েছে।’’ মার্কিন কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ যদিও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই ট্রাম্পই কিছু দিন আগে মন্তব্য করেছিলেন— যুদ্ধ করলে কিন্তু ইরান শেষ! এই মুহূর্তে মিশর থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রায় ৭০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। সেই হিসেবে অতিরিক্ত দেড় হাজার সেনা সত্যিই কম। তবু ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউসের আর্মড সার্ভিস কমিটির নেতা অ্যাডাম স্মিথ বললেন, ‘‘এমন একরোখা, ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্তে যুদ্ধের উত্তেজনাই বাড়বে।’’

এমন পরিস্থিতিতে আরব জোটের সঙ্গে ট্রাম্পের অস্ত্র-ব্যবসা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, মোট ২২টি চুক্তি হয়েছে। বরাবরই এমন চুক্তির ব্যাপারে মার্কিন কংগ্রেস বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ট্রাম্প কংগ্রেসকে এড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই অভিযোগ। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে এই মুহূর্তে ইয়েমেনের হুথি জঙ্গিদের কার্যত যুদ্ধ চলছে। তাই এ বার ইয়েমেনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা অনেকের। সেনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রধান ডেমোক্র্যাট নেতা মেনেনডেজ় বললেন, ‘‘আমি হতাশ। কিন্তু চমকে যাইনি। আমেরিকার দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে ফের ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। উল্টে, অস্ত্র-ব্যবসার বহর বাড়িয়ে সৌদি আরবের মতো স্বৈরতান্ত্রিক দেশকে আরও এগিয়ে দিলেন তিনি।’’

এ দিকে সরাসরি যুদ্ধের কথা বলছে না ইরান। তবে তড়িঘড়ি মধ্যস্থতা কিংবা আলোচনাও চাইছে না তেহরান। যথাযোগ্য সম্মান না-পাওয়া পর্যন্ত রুখে দাঁড়ানোটাই এখন তাঁদের আসল কাজ বলে মন্তব্য করেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি।

US Troops USA West Asia Iran Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy