কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন
তিন দিনের নীরবতা ভেঙে অবশেষে মুখ খুলল ভ্যাটিকান। গত শনিবার গণভোটের রায়ে সমকামী বিয়ে বৈধ হয়েছে আয়ার্ল্যান্ডে। গত কাল রাতে ভ্যাটিকানের বিদেশমন্ত্রী কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন এক রেডিও বার্তায় বলেছেন, ‘‘এই রায় আসলে মানবতার পরাজয়।’’
অতি রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত আয়ার্ল্যান্ডের এই গণভোটের ফল অবাক করে দিয়েছিল অনেককেই। আইরিশরা বেশির ভাগই গোঁড়া ক্যাথলিক ধর্মে বিশ্বাসী। সে দেশের ষাট শতাংশেরও বেশি মানুষ সমকামী বিয়েতে কী ভাবে সায় দিচ্ছেন, তা নিয়ে ধন্দে আইরিশ ক্যাথলিক সমাজ। গণভোটের ফল বেরোনোর পর দিনই ডাবলিনের আর্চবিশপ ডি মার্টিন তো ঘোষণাই করে দিয়েছেন, দেশের গির্জাগুলির এখন উচিত তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে বেশি করে যোগাযোগ রাখা।
এই অবস্থায় গত তিন দিন বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও মতামত প্রকাশ করেনি ভ্যাটিকান। কাল রেডিওতে আচমকাই বিষয়টি নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন কার্ডিনাল প্যারোলিন। পোপ ফ্রান্সিসের পরে খাতায় কলমে তিনিই ভ্যাটিকান সিটির সব চেয়ে উচ্চপদস্থ আধিকারিক। রেডিও বার্তার পরে কাল কিছু ক্ষণের জন্য সাংবাদিকদেরও মুখোমুখি হয়েছিলেন প্যারোলিন। সেখানেও তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে একই সুর। বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় না এটা শুধু খ্রিস্টান নীতির হার। এটা আসলে গোটা মানবতারই পরাজয়।’’
তবে প্যারোলিন বিষয়টি নিয়ে যতই সরব হোন না কেন, খোদ পোপ ফ্রান্সিসের এ বিষয়ে নীরবতাও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। পোপের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই যে কয়েকটি বিতর্কে ফ্রান্সিস জড়িয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম হল সমকামিতা নিয়ে তাঁর উদার মনোভাব। পোপ ফ্রান্সিস এক বার বলেছিলেন, ‘‘যদি কোনও মানুষ সমকামী হয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদপ্রার্থী হন, যদি তিনি ভাল মানুষ হন, তা হলে আমি কে তাঁর বিচার করার?’’ খোদ পোপের এমন মন্তব্যের পরে বিশ্ব জুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। ক্যাথলিক ধর্ম সমকামিতা পাপ বলে মনে করে। পোপ নিজে সেই ধর্মের মূল প্রতিনিধি হয়ে কী করে এমন কথা বলছেন, সে প্রশ্নও উঠেছিল।
আয়ার্ল্যান্ডের গণভোটের ফল নিয়ে তাই হয়তো চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফ্রান্সিস। অনেকেই মনে করছেন, বিতর্ক এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত পোপের। তবে আজ সকালে ভ্যাটিকানে সংসারধর্ম নিয়ে এক আলোচনাসভায় বক্তব্য রেখেছেন পোপ। আর সেখানে বারবারই নারী-পুরুষের বৈবাহিক জীবনের উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy