নিরামিষাশী যাত্রীকে আমিষ খাবার পরিবেশন! বাধ্য হয়ে তা-ই খেতে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল যাত্রীর। ঘটনাটি ঘটেছে কাতার এয়ারওয়েজ়-এর লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে কলম্বোগামী বিমানে। বছর দুয়েক আগের ওই ঘটনায় সম্প্রতি নতুন করে নানা তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। এর পরেই বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করেছেন মৃত যাত্রীর পুত্র।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের ৩০ জুন। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে কলম্বো— মাঝে সাড়ে ১৫ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রাপথ। তাই বিমানে উঠেই নিরামিষ খাবারের অর্ডার দিয়ে রেখেছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধ। কিন্তু নিরামিষ খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁকে আমিষই পরিবেশন করেন বিমানকর্মী। অনুরোধ করা হয়, মাংস বাদ দিয়ে বাকিটুকু খাওয়ার। অশোক জয়বীর নামে ৮৫ বছর বয়সি ওই যাত্রী ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত হৃদ্রোগবিশেষজ্ঞ। চাকরি করতেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায়। এত বছরের জীবনে কখনও আমিষ খাননি অশোক। কিন্তু উপায়ান্তর না দেখে মাংস বাদ দিয়ে বাকি খাবারটুকুই খাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিছু ক্ষণ পরেই গলায় ও বুকে চাপ অনুভব করতে শুরু করেন তিনি। ছুটে আসেন বিমানকর্মীরা। অশোকের অবস্থার অবনতি হলে শেষমেশ স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। দ্রুত ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন:
জানা যায়, ‘অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া’-র কারণে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, যা এক ধরনের ফুসফুসের সংক্রমণ। অ্যালার্জি আছে এমন খাবার কিংবা পানীয় থেকে এমনটা হতে পারে। তা ছাড়া, সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, ওই বিমানের কর্মীরাও যথাসময়ে পদক্ষেপ করেননি। আগে থেকে খাবার অর্ডার করা সত্ত্বেও বিমানে পর্যাপ্ত নিরামিষ খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি, যখন অশোকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তখন পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়ার মতো পরিকাঠামোও ছিল না ওই বিমানে। এর পরেই সম্প্রতি কাতার এয়ারওয়েজ়-এর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ছেলে সূর্য জয়বীর। এ জন্য ওই সংস্থার থেকে ১,২৮,৮২১ ডলার ক্ষতিপূরণও দাবি করছেন তিনি, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১,১৪,৩৭,৭০০ টাকার কাছাকাছি।